ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে
জাতীয় জীবনে যাতে ফ্যাসিবাদের জন্ম না হয়, সে ব্যাপারে সদাসতর্ক থাকার জন্য বিচারপতি জনাব এস, এম. হােসেন আহ্বান জানিয়েছেন।
গতকাল সােমবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পরিষদ মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হিটলারী ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বিজয়ের ৩০তম বার্ষিকী পালন উপলক্ষে আয়ােজিত এক সেমিনারে সভাপতির ভাষণে জনাব এস. এম. হােসেন এই কথাগুলাে বলেন। বাংলাদেশ শান্তি পরিষদ কর্তৃক আয়ােজিত সপ্তাহব্যাপী এই অনুষ্ঠানের তৃতীয় দিনের সেমিনার ছিল গতকাল। সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন মিসরের চার্জ দ্য এফেয়ার্স আহমেদ আতিয়া আলিমেসি, সংসদ সদস্য জনাব মহিউদ্দীন, ডা: সাইদুর রহমান ও অধ্যাপক আব্দুল হালিম।
বিচারপতি এস. এম হােসেন বলেন, রাজনৈতিক সামাজিক, অর্থনৈতিক ও চিন্তার বিপর্যয় থেকেই ফ্যাসিবাদের জন্ম হয়। বিশ্বের ফ্যাসিবাদী চক্রান্তের ইতিহাস বর্ণনা করে জনাব হােসেন বলেন, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হলে দেশের যুবকদের আশার আলাে দেখাতে হবে।
জনাব এস. এম. হােসেন তাঁর ভাষণে আরাে বলেন, ১৯২০ সাল থেকে দ্বিতীয় মহাযুদ্ধ—সবই সংঘটিত হয়েছিল ফ্যাসিবাদকে নির্মূল করার জন্য। অথচ যুদ্ধের পর ঔপনিবেশিক দেশগুলােই মােজাম্বিক এ্যাঙ্গোলা, আলজিরিয়া ও ভিয়েতনামসহ অনেক অনুন্নত দেশে ফ্যাসিবাদকে পুনরুজ্জীবিত করেছে। অমানুষিক অত্যাচার চালিয়েছে। বিরাট যুদ্ধের পর রাষ্ট্রীয় অস্থিরতাই এর জন্য দায়ী ছিল বলে জনাব হােসেন উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, অস্থিরতার হাত থেকে যুবসমাজকে রক্ষা করতে হবে। তাদেরকে রাষ্ট্রীয় রূপরেখা দিতে হবে রাষ্ট্রীয় ৪টি মৌল আদর্শের ভিত্তিতে তরুণদের মনে আশার আলাে সঞ্চারিত না করতে পারলে ফ্যাসিবাদ বন্ধ করা যাবে না বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ভিয়েতনামে পরাজিত হওয়ার পরও ফ্যাসিবাদ ক্ষান্ত হতে চাইছে না। ওদের বিষদাঁত উপড়ে ফেলতে হবে বলেও তিনি তার ভাষণে উল্লেখ করেন।
সাম্রাজ্যবাদী দেশগুলাের সকল সামরিক ঘাঁটি তুলে ফেলার দাবী জানিয়ে জনাব মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, এশিয়ার নিরাপত্তাই বিশ্বের শান্তির চাবিকাঠি। আমরা শান্তির নির্ভরযােগ্য গ্যারান্টি চাই।
সূত্র: বাংলার বাণী, ৬ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত