You dont have javascript enabled! Please enable it!

৬৪ হাজার গ্রামে বিজলী যাবে – সেরনিয়াবাত

বন্যা নিয়ন্ত্রণ বিদ্যুৎ ও পানি সম্পদ মন্ত্রী জনাব আবদুর রব সেরনিয়াবাত বলেছেন, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ নলছিটিতে বিদ্যুতায়নের কাজ সম্পন্ন হবে। খবর বাসস পরিবেশিত।
আজ এখানে এক জনসভায় বক্তৃতা দানকালে মন্ত্রী বলেন, অধিক খাদ্য ফলাও এবং শিল্প উৎপাদন বাড়ানাের জন্য পল্লী বৈদ্যুতিকীকরণ কর্মসূচীর অধীনে দেশের ৬৪ হাজার গ্রামকে বৈদ্যুতিককীকরণ করা হবে।
তিনি বলেন, নলছিটি বৈদ্যুতিকীকরণ এই পল্লী বৈদ্যুতিকীকরণ কর্মসূচীরই অংশ বিশেষ। তিনি বলেন, তবে ৬৪ হাজার গ্রামে বিদাতায়ন কর্মসূচী বাস্তবায়নে সময় লাগবে এবং ধাপে ধাপে এ কাজ করা হবে।
জনাব সেরনিয়াবাত বলেন, পল্লী এলাকায় বিদ্যুতের মাধ্যমে পাওয়ার পাম্প চালানাে হবে এবং এতে অল্প খরচ পড়বে। তিনি আরাে বলেন, পল্লী বৈদ্যুতিকীকরণ কর্মসূচী বাস্তবায়িত হলে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি এবং বেকার সমস্যার সমাধান হবে।
দিনাজপুর, ৪ঠা মে। উত্তরবঙ্গের শহর সমূহে এখন বিদ্যুতের ম্যাজিক খেলা চলছে বিদ্যুৎ উধাও অথবা উচ্চ ও নিম্ন ভােল্টেজের সরবরাহের দরুন প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার বৈদ্যুতিক সামগ্রী বিনষ্ট হচ্ছে। উত্তরবঙ্গের জেলা শহর দিনাজপুর রংপুর, বগুড়া, পাবনা, রাজশাহী এবং মহকুমা শহর ঠাকুরগাঁ, নীলফামারী, গাইবান্ধা, সিরাজগঞ্জ, চাপাইনবাবগঞ্জ সর্বত্র একই অবস্থা বিরাজবান।
যে কোনাে সময় বিনা নােটিশে হঠাৎ করেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়াটা এখন নৈমিত্তিক ব্যাপার। কখনাে বেশী এবং কখনাে কম ভােল্টেজ। যখন হাই ভােল্টেজ থাকে তখন বিদ্যুৎ জ্বলে ২৪০ এর পরিবর্তে ২৮০ হতে ৩০০ ভােল্টেজে। আবার যখন নিম্ন বা লাে ভােল্টেজ থাকে, তখন জলে ২০০ ভােল্ট। অথচ ভােল্টেজ থাকা প্রয়ােজন ২৪০। এ ভােল্টেজের মিনিটে মিনিটে এই ওঠা-নামার ফলে শিল্প প্রতিষ্ঠানসমূহের দারুণ ক্ষতি হচ্ছে। ধান বা আটা মিল চলাকালীন এই ওঠানামার ফলে মিলের মােটরের কয়েল পুড়ে যায়। এতে মােটরটি পরিবর্তন করতে হয়। ঘন ঘন মােটর জ্বলে যাওয়ার দরুন বহু মিল ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গেছে।
বিদ্যুৎ চালিত টেপ রেকর্ডারসমূহ বিকল হয়ে যাচ্ছে এই বিদ্যুতের ওঠা-নামার দরুন। আর এ ভাবে উত্তরবঙ্গের শতকরা ৯০টি বিদ্যুত্বহী টেপরেকর্ডার বিনষ্ট হয়ে গেছে বলে জানা গেছে।
উত্তরবঙ্গে প্রতিদিন গড়ে প্রায় এক হাজার বাল্ব ও টিউব লাইট একই কারণে ফিউজ হয়ে যাচ্ছে। ভােল্টেজের এই ওঠানানার ফলে টেলি যােগাযােগের ইন্ডিকেশন বা ফিউজ হয়ে যাচ্ছে। ফলে টেলিফোন একরকম বিকল অবস্থাতেই পড়ে থাকে।
উপরােক্ত কারণে বিগত ৩ বছরে উত্তরবঙ্গের প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের বৈদ্যুতিক সরঞ্জামাদি বিনষ্ট হয়েছে ও প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে। তাই এতদঞ্চলের মানুষ শিল্প প্রতিষ্ঠানের উন্নতি কল্পে বিদ্যুতের এহেন ভানুমতির খেলার অবসান কামনা করেছেন।

সূত্র: বাংলার বাণী, ৬ মে ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!