জাতিসংঘ বাংলাদেশের ১৫ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি মিটানাের জন্য সাহায্য লাভের প্রচেষ্টা চালাইবে
জাতিসংঘ বাংলাদেশের আগামী বছরের আনুমানিক ১৫ লক্ষ টন খাদ্য ঘাটতি মেটানাের জন্য আন্তর্জাতিক সাহায্য লাভের প্রচেষ্টা চালাইবে বলিয়া আশা করা যাইতেছে।
খাদ্য ও ত্রাণমন্ত্রী জনাব আব্দুল মােমিন গতকাল বুধবার ঢাকায় রাষ্ট্রসংঘের মহাসচিব কূট ওয়ার্ল্ড হেইমের নিজস্ব প্রতিনিধি ভিক্টর উইম রাইটের সঙ্গে দেড় ঘণ্টাকাল আলােচনার পর এনা প্রতিনিধিকে এই সংবাদ জানান।
ড: উইম রাইট চলতি বছরে বাংলাদেশের খাদ্য পরিস্থিতি পর্যালােচনা এবং আগামী বছরে বাংলাদেশের সার্বিক খাদ্য চাহিদা যাচাইয়ের জন্য বর্তমানে বাংলাদেশ সফর করিতেছেন। তার বর্তমান বাংলাদেশ সফর হইতেছে খাদ্য ঘাটতির সম্মুখীন বিশ্বের অনুন্নত দেশসমূহ সফরের অংশ বিশেষ।
রাষ্ট্রসংঘের সদর দপ্তরে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি এই সমস্ত দেশের খাদ্য পরিস্থিতি এবং মােট খাদ্য চাহিদার উপর একটি বিস্তারিত রিপাের্ট দাখিল করিবেন বলিয়া আশা করা যায়। এর মূল উদ্দেশ্য হইতেছে খাদ্য শস্য উদ্বৃত্ত দেশসমূহ হইতে ঘাটতি দেশসমূহে খাদ্য সরবরাহ করা।
খাদ্যমন্ত্রী জনাব আবদুল মােমিন বলেন, পরবর্তী ৩/৪ বছরে বাংলাদেশে খাদ্যোর বিনিময়ে কাজ কর্মসূচী চালু রাখার জন্য তিনি রাষ্ট্র সঙ্গের বিশেষ সহযােগিতা প্রার্থনা করিয়াছেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, খাদ্যের বিনিময়ে কাজ কর্মসূচী অনুসারে গরীব জনসাধারণকে বাঁচাইয়া রাখাই সরকারের উদ্দেশ্য। একই সময়ে ছােট ও বড় সেচ প্রকল্প, কৃষি উন্নয়ন এবং স্বল্প সময়ের ব্যবধানে খাদ্যে স্ব নির্ভরতা অর্জনের প্রচেষ্টা জোরদার করাও এই কর্মসূচীর লক্ষ্য।
জনাব মােমিন বলেন, তিনি বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ থাকায় বিদেশ হইতে খাদ্য আনার জন্য জাহাজ ভাড়া প্রদানের ব্যাপারেও জাতিসংঘের সাহায্য প্রার্থনা করিয়াছেন।
খাদ্য পরিস্থিতির কথা বিশ্লেষণ করিয়া জরুরী পরিস্থিতি মােকাবেলার জন্য খাদ্যমন্ত্রী দেশের অভ্যন্তরে খাদ্য মওজুদ এবং চলাচলের ব্যাপারেও রাষ্ট্রসংঘের সাহায্যের প্রয়ােজনীয়তার কথা উল্লেখ করেন।
আলােচনা কালে বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি এবং অন্যান্য কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ২৪ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত