আশুগঞ্জে খাদ্যমন্ত্রী
দরিদ্র চাষীদের নাজেহাল না করার নির্দেশ
খাদ্যমন্ত্রী জনাব আবদুল মােমিন আজ খাদ্যশস্যের সর্বাধিক সংগ্রহের জন্যে কাজ করে যাওয়া ও এ ব্যাপারে সরকারের ঘােষিত নীতি বিশ্বস্তভাবে অনুসরণের জন্য সরকারী কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়াছেন। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র চাষীরা যাহাতে নাজেহাল না হয় এবং ধনী ও স্বচ্ছল চাষীরা যেন সগ্রহ অভিযান থেকে অব্যাহতি না পায় সেদিকে কর্মকর্তাদের লক্ষ্য রাখিতে হইবে।
চলতি ইরি-বােরাে ফসলের সংগ্রহ অভিযানের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের পরে প্রদত্ত ভাষণে খাদ্যমন্ত্রী জনাব মােমিন বলেন যে, গত শীত মৌসুমের অনুরূপ এই অভিযানও অত্যন্ত উদার এবং দুঃসময়ের জন্যে প্রণীত হইয়াছে।
খাদ্যমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচী বাস্তবায়নের ব্যাপারে সরকারের কোনরূপ মুনাফা লাভের উদ্দেশ্য নেই, বরং সংগৃহীত খাদ্যশস্য সাধারণ মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে সাহায্য করিবে।
তিনি বলেন গত সংগ্রহের মতই খাদ্যশস্যের একটি বড় অংশ ক্রয় কেন্দ্রে মজুত রাখা হইবে এবং দুর্গতির দিনে সংশােধিত রেশনিং ও অন্যান্যভাবে কমদামে দরিদ্র জনসাধারণের মধ্যে বিতরণ করা হইবে। ধনী ও স্বচ্ছল চাষীদের প্রসঙ্গে খাদ্যমন্ত্রী বলেন, সরকার উৎপাদন বাড়ানাের জন্যে প্রতি বছর বিরাট অংকের অর্থ ব্যয় করেছেন। কাজেই উদ্বৃত্ত খাদ্যশস্য বিক্রয় করে সংগ্রহ অভিযানকে সফল করার জন্যে সরকারের আহ্বানে সাড়া দেয় জনসাধারণের নৈতিক দায়িত্ব। খাদ্যমন্ত্রী বলেন, পূর্ববর্তী ঘােষণা অনুযায়ী কেউই লাইসেন্স ছাড়া ধান-চালের ব্যবসা করিতে পারিবে না। তিনি বলেন, চাল ব্যবসায়ীরা এক সঙ্গে চারশ’ মন চাল সাতদিনের জন্য রাখিতে পারিবে। এর আগে তাহারা দেড়শ’ মণ রাখিতে পারিত। কেউ চাল মজুদ করার চেষ্ট চালালে কঠোর শাস্তি পাবে বলিয়া তিনি হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন। খাদ্যমন্ত্রী এর আগে তিঘর (যবাইল) ও কর্ণেল বাজারে গিয়া (কসবা) বিভিন্ন কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচীর অগ্রগতি পর্যবেক্ষণ করেন। খাদ্যমন্ত্রীর সঙ্গে এই সফরে তথ্য ও বেতার প্রতিমন্ত্রী জনাব তাহের উদ্দিন ঠাকুরও ছিলেন।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ২৪ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত