যুক্তরাষ্ট্রে খাদ্য দিবসে বাংলাদেশের জন্য অর্থ সংগ্রহ
ওয়াশিংটন সম্প্রতি জাতীয় খাদ্য দিবস” উদযাপনকালে মার্কিন আইন প্রণেতাগণ বিশ্বখাদ্য সংকটের ব্যপকতা এবং এ সমস্যার সমাধানে সুসংহত সরকারী উদ্যোগের প্রয়ােজনীয়তার প্রতি আলােকপাত করেন।
কংগ্রেস প্রতিনিধিদল দেশব্যাপী হাজার হাজার আমেরিকান নাগরিকদের সাথে “খাদ্য দিবসের বহুবিদ অনুষ্ঠানে যােগদান করেন। ওয়াশিংটনের মুনাফাবিহীন গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর সায়েন্স ইন দি পাবলিক ইন্টারেষ্ট এর উদ্যোগে খাদ্য সংকট সম্পর্কে এই জাতীয় কার্যক্রম দিবস হিসেবে এই “খাদ্য দিবস” উদযাপিত করা হয়।
এ উপলক্ষে ওয়াশিংটনের সেষ্ট পিটার্স প্যারিস চার্চে আয়ােজিত এক নৈশভােজ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে ভাবমষ্টের প্যাট্রিক জে লিহী বলেন: “আমাদের এখন কেবল কৃষিনীতি গ্রহণ করলেই চলবে না খাদ্য নীতির গ্রহণ করতে হইবে। যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশে খাদ্য ত্রাণ কর্মসূচীর জন্যে অর্থ সংগ্রহ করে এই নৈশভােজ অনুষ্ঠানের আয়ােজন করা হয়।
সিনেটর বলেন, “আজ একথা পরিষ্কার যে, প্রত্যেকের ক্রয় ক্ষমতাধীন মূল্যমানে এদেশে পর্যাপ্ত খাদ্য পাইতে হইলে এবং অন্যদের সাহায্য করার ব্যাপারে আমাদের দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখিতে হইবে-আর আভ্যন্তরীণ অভাব যুক্তরাষ্ট্রকে আন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালন হইতে অব্যাহত দেয় না-আমাদের কৃষি নির্ভর খাদ্য নীতিকে উল্লেখযােগ্য পরিবর্তন সাধন করিতে হইবে।
ক্যালিফোর্নিয়ার প্রতিনিধি ফোর্টনি স্টার্ক সমাবেশে ভাষণ দেন। তিনি খাদ্যমূল্য ও পুষ্টি বিষয়ক আভ্যন্তরীণ সমস্যার ব্যাপারে নতুন করিয়া সরকারী কর্মপন্থা গ্রহণের আহ্বান জানান। খাদ্য সমস্যার ব্যাপারে তিনি ক্রেতাদের উদ্যোগকে উৎসাহিত করেন এবং খাদ্যমূল্য হ্রাস করার ব্যাপারে সংঘবদ্ধ দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
‘খাদ্য দিবস’ উপলক্ষে সারা দেশব্যাপী যে কর্মসূচী নেওয়া হইয়াছিল-ওয়াশিংটনের বিভিন্ন চার্চেও অনুরূপ কর্মসূচীর মাধ্যমেই ‘খাদ্য দিবস’ পালন করা হয়। এই কর্মসূচীতে ছিল পুষ্টি, খাদ্যমূল্যের ক্রম বৃদ্ধি এবং বিশ্বব্যাপী ক্ষুধার তীব্রতা।
‘খাদ্য দিবস’ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে ক্যাপিটল হিলে ওহায়াে অংগরাজ্যের কংগ্রেস সদস্য জন সেইবার লিং খাদ্য গবেষণা ও উন্নয়ন সমপর্কিত একটি বিল পেশ করেন। বিলটিতে খাদ্য, পশুখাদ্য ও সার উৎপাদনের উন্নত ধরনের পদ্ধতি উদ্ভাবনকল্পে গবেষণার জন্য সাহায্য মঞ্জুরীর সুপারিশ করা হইয়াছে। মি: সেইবার-ইংয়ের এই বিল উচ্চমানের পুষ্টিসমৃদ্ধ স্বল্পমূল্যের নতুন খাদ্য ও উন্নত ধরনের স্বল্পব্যয়ী সেচপ্রণালী উদ্ভাবনের জন্য প্রয়ােজনীয় গবেষণা কর্মেও সহায়তা করিবে।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ২৪ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত