লাখাই থানা এলাকার
সরকারী সম্পদ আত্মসাতের রহস্য উদঘাটনের আবেদন
গত কয়েক বৎসর যাবত মহকুমার লাখাই থানা এলাকার লাখাই গ্রামের জনৈক সংখ্যালঘুর পরিত্যক্ত দালান গৃহে ৬৩ খানা ঢেউটিন পরিত্যাক্ত সম্পত্তি হিসাবেই রক্ষিত ছিল। কিন্তু বর্তমানে তাহা পাওয়া যাইতেছে না বলিয়া অভিযােগ শােনা গিয়াছে। কে বা কাহারা উক্ত সরকারী সম্পত্তি (টিনগুলি) আত্মসাৎ করিয়াছে তাহারও কোন খোঁজ পাওয়া যাইতেছে না।
উল্লেখ্য যে, ১৯৭২ সাল হইতে উক্ত টিনগুলি নাকি লাখাই সিও (ডেড) অফিসের জনৈক কর্মচারীর তত্ত্বাবধানের ছিল। তিনি বর্তমানে আজমীরিগঞ্জ সিও অফিসে কর্মরত রহিয়াছে বলিয়া প্রকাশ। জানা গিয়াছে যে, বর্তমানে উক্ত টিনগুলির মাত্র ৩ খানা টিন টি, আই ও লাখাই এর তত্ত্বাবধানে রহিয়াছে। বাকী টিন কোথায় উধাও হইয়া গিয়াছে।
প্রকাশ, সিলেট জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ১৮ই মার্চ স্থানীয় সিও উক্ত টিন সম্পর্কে অনুসন্ধানের জন্য লাগাই গ্রামে আসেন এবং স্থানীয় জনসাধারণের কাছে সে সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদও করেন। ইহাতে জানা যায় যে, উক্ত ৬৩ খানা টিন হইতে ২০ খানা টিন লাখাই গ্রামের জনৈক ব্যক্তিতকালীন তত্ত্বাবধায়ক নূর মিয়ার নিকট হইতে জোরপূর্বক লইয়া গিয়াছে এবং নিজে বাসগৃহ নির্মাণ করিয়াছে বলিয়া স্থানীয় জনসাধারণ সূত্রে সি ও জানিতে পারেন। সংশ্লিষ্ট কর্মচারী বিদায়কালে এ ব্যাপারে স্থানীয় সিও সাহেবকে জানাইয়া গিয়াছেন এবং তিনি একথাও জানাইয়াছেন যে অবশিষ্ট ৪৩ খানা টিন স্থানীয় টি ই ও লাখাই এর নিকট রহিয়াছে। কিন্তু এ সম্পর্কে কি রিপাের্ট দেওয়া হইয়াছে জনসাধারণ তাহা জানিতে পারে নাই। কারণ দীর্ঘ দিন অতীত হইয়া চলিলেও এ সম্পর্কে আর কোন উচ্চবাচ্চ শােনা যাইতেছে না।
তাই স্থানীয় জনসাধারণের জিজ্ঞাসা এই যে, সরকারী মাল আত্মসাতের এই ব্যাপারটি কি এইভাবে ধামাচাপা দিয়া রাখা হইবে, না ইহার কোন সুরাহা করা হইবে? অবিলম্বে এ ব্যাপারে অনুসন্ধান চালাইয়া ইহার বাস্তব রহস্য উদঘাটন করার, এবং আত্মসাৎকারীদের উপযুক্ত শাস্তিদানের জন্য স্থানীয় জনসাধারণ উৰ্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আবেদন জানাইয়াছেন।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ২১ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত