টাউট মুনাফাখখার অসাধু ব্যবসায়ী মজুদদারেরা এখনাে তৎপর
একশত টাকার নােট অচল ঘােষিত হওয়ার সাথে সাথে পারমিটবাজী, মুনাফাখাের ও দুর্নীতিবাজদের মৃত্যু ঘণ্টা বাজিয়া উঠিয়াছে। দেশের অর্থনীতিকে সমূহ বিপর্যয় হইতে রক্ষা করার জন্য সরকার এই যে শুভ পদক্ষেপ গ্রহণ করিয়াছেন তাহাতে জাতির উপরােক্ত শত্রুরা আতঙ্কিত ও দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হইয়া পড়িয়াছে। কেননা, তাহাদের দিন ফুরাইয়া আসিয়াছে। এতদিন তাহারা যে রক্তশােষণ করিয়াছে উহার প্রায়শ্চিত করার দিন উপস্থিত হইয়াছে। তবুও এক শ্রেণীর টাউট ও অসাধু ব্যবসায়ী অন্তিম মুহূর্তেও কালাে টাকার মােহমুক্ত হইতে পারিতেছে না বলিয়া চারিদিকের। হাবভাব দেখিয়া মনে হইতেছে। তাহারা এখনও বাজারে জিনিসপত্রের কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করিয়া অধিকহারে মুনাফা লুটা ও কালাে-টাকা অর্জনের মত অসৎকাজে লিপ্ত রহিয়াছে। সহসা একশত টাকার নােট অচল ঘােষণার পর জনগণের দৈনন্দিন জীবনে একান্ত অস্থায়ীভাবে যে সামান্য চাপ পড়িয়াছে অসাধু ব্যবসায়ীরা তাহার সুযােগ গ্রহণ করিয়াছে। তাহারা জিনিসপত্র গুদামজাত করিতে শুরু করিয়াছে। ঢাকার বড় বড় বিপনীকেন্দ্রের বহু দোকান-পাট গত সােমবার হইতে খােলা হইতেছে না। এই সব দোকানের মালিকরা বড় আড়তদার ও নাম করা কিষ্ট হিসাবে পরিচিত। অচল একশত টাকাজমা নেওয়ার শেষ দিন ছিল গত বুধবার। গত বৃহস্পতিবার হইতে ব্যাংকের স্বাভাবিক লেন-দেন পুনরায় শুরু হইয়াছে। অথচ গতকাল শুক্রবারও রাজধানীর বিভিন্ন বিপনী কেন্দ্রের বহু দোকান খােলা হয় নাই। ফলে বাজারে বেচা-কেনার ক্ষেত্রে একরকম অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হইয়াছে।
অভিজ্ঞ মহলের ধারণা, কালােবাজারী, মুনাফাখাের ও পারমিটধারীরা এখনও পাঁয়তারা করিতেছে। রাতারাতি কালাে টাকার পাহাড় জমানাে ও সীমাহীন মুনাফা অর্জনের নেশায় এখনও তাহারা বিভাের।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ১২ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত