ইরি ও বােনাের সংগ্রহমূল্য নির্ধারিত
আগামী ২১শে এপ্রিল হইতে সারা দেশব্যাপী বােরাে এবং ইরি ধান-চাউল সংগ্রহ অভিযান শুরু হইতেছে। আমন ফসলের ন্যায় এই সংগ্রহ অভিযানও বাধ্যতামূলক। এই প্রথমবারের মত বােরাে ইরি ধান চাল সংগ্রহ অভিযান পরিচালিত হইতেছে। খাদ্যশস্য বিক্রয় এবং সংগ্রহ আদেশ ১৯৪৮-এর আওতায় এ অভিযান চলবে।
এই বােরা ইরি ধান চাউল সংগ্রহ নীতি খুবই উদারভাবে প্রণয়ন করা হইয়াছে। একজন কৃষক তাহার নিজ পরিবারের তিন বছরের ঊর্ধ্ব বয়স্ক প্রত্যেকের জন্য এবং স্থায়ীভাবে নিযুক্ত মজুরের খােরাকী বাবদ মাসে সাড়ে ছাব্বিশ সের ধান বা সাড়ে সতের সের চাল তাহার পরবর্তী ফসল না উঠা পর্যন্ত রাখিতে পারিবেন। যদি কোন কৃষক কেবলমাত্র বােররা ও ইরি এক ফসল উৎপন্ন করেন সে ক্ষেত্রে তিনি তাহার আগামী বছরের বােরাে ধান না উঠা পর্যন্ত অর্থাৎ বারাে মাসের জন্য উপরােক্ত হারে খােরাকী বাবদ ধান চাউল রাখিতে পারিবেন। যদি কোন কৃষক বােরাে ইরি এবং আমন ধান চাষ করেন তবে সেই কৃষক পরিবার আগামী আমন ফসল পর্যন্ত অর্থাৎ সাত মাসের খােরাকী রাখিতে পারিবেন। কিন্তু যে সব কৃষক-পরিবারের বােরাে-ইরি, আউশ এবং আমন ফসলের জমি আছে তাহারা আগামী আউশ ফসল পর্যন্ত অর্থাৎ তিন মাসের খােরাকী রাখিতে পারিবেন। খােরাকী ছাড়াও একজন কৃষক প্রতি একর বােরাে ইরি জমির জন্য এক মণ করিয়া বীজধান রাখিতে পারিবেন।
উপরােক্ত খােরাকী ও বীজের জন্য ধান চাউল ছাড়াও অন্যান্য প্রয়ােজন মিটাবার জন্যে এক ফসল (অর্থাৎ কেবলমাত্র বােরাে ইরি) উৎপাদনকারীকে অতিরিক্ত আরাে চল্লিশ মণ ধান রাখিতে দেওয়া হইবে। আর যদি কোন উৎপাদনকারীর একাধিক ধান ফসল হয় সেক্ষেত্রে তাহাকে খােরাকী ও বীজধান ব্যতীত অতিরিক্ত আরাে বিশ মন ধান রাখিতে দেওয়া হইবে।
কৃষক উদ্ধৃত বােরাে/ইরি ধান দুশাে মণ পর্যন্ত শতকরা পঞ্চাশ ভাগ এবং দু’শাে মণের অতিরিক্ত উদ্বৃত্তের শতকরা পঁচাত্তর ভাগ সরকার নির্ধারিত মূল্যে গ্রহ করিবেন।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ১০ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত