নদী-বন্দর মােরেলগঞ্জ
জাহাজ ভিড়িলে খুলনা ও বরিশাল জেলার লক্ষ লক্ষ লােক উপকৃত হইবে
মঙ্গলা ঘসিয়াখালি নদীর খননের পর বাংলাদেশে বিশেষ করিয়া দক্ষিণ বাংলায় নৌ ও জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে এক নূতন যুগের সূচনা হইয়াছে। এই নদী খননের পর ঢাকা খুলনা নদী পথের দূরত্ব অনেক কমিয়া গিয়াছে। পূর্বে ঢাকা হইতে কোন জাহাজ বা ষ্টিমারে খুলনা যাইতে হইলে সুষ্ক মওসুমে উহাকে সমুদ্র ও পশর নদী ঘুরিয়া যাইতে হইত, আর বর্ষা মওসুমে মধুমতী ও আঠারবাকী নদী হইয়া যাইতে হইত।
বর্তমানে অর্থাৎ উপরােক্ত নদী খননের পর ঢাকা-খুলনা চলাচলকারী কোনাে নৌযানকে আর এত দীর্ঘ পথ অতিক্রম করিতে হইতেছে না। জাহাজ ষ্টিমারসহ সকল নৌযান এখন খসিয়াখালী-মঙ্গলা নদী দিয়া হুলারহাট মঙ্গলা বন্দর সরাসরি যাতায়াত করে।
দক্ষিণ বাংলার ঐতিহ্যবাহী সুপ্রসিদ্ধ নদী বন্দর মােরেলগঞ্জ। এই বন্দরটি ঘসিয়াখালির সামান্য ভাটায় ধলেশ্বরী নদীর তীরে অবস্থিত এক্ষণে ঢাকা হইতে খুলনাগামী ও খুলনা হইতে ঢাকাগামী জাহাজ যদি মােরেলগঞ্জ বন্দরে ভিড়ানোের ব্যবস্থা করা হয় তবে বরিশাল ও খুলনা এই দুইটি জেলার লক্ষ লক্ষ অধিবাসী বহু উপকৃত হইত। এই দুইটি জেলার বিস্তীর্ণ অঞ্চলের ন লক্ষ লােকের রাজধানী ঢাকার সহিত সহজ যােগাযােগ রক্ষা ও ব্যবসা বাণিজ্যের বৃহত্তর স্বার্থে মােরেলগঞ্জ বন্দরে অভিলম্বে জাহাজ ও ষ্টিমার ভিড়ানাে অপরিহার্য হইয়া পড়িয়াছে। তথায় জাহাজ ভিড়ানাের ব্যবস্থা করা হইলে বরিশাল জেলার ভাণ্ডারিয়া, মঠবাড়িয়া ও পাথারঘাটা থান এবং খুরনা জেলার বাগেরহাট, মােরেলগঞ্জ শরণখােলা ও কচুয়া থানায় অধিবাসীরা দু অঞ্চলের সহিত যােগাযােগ ও ব্যবস্থা বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুবর্ণ সুযােগ লাভ করিবে।
প্রসংগত: উল্লেখযােগ্য যে, অতীতে যখন আর, এস, এন কোম্পানীর ষ্টিমার বরিশাল ও বাগেরহাটের মধ্যে চলাচল করিত তখন সেই ষ্টিমার নিয়মিত মােরেলগঞ্জ বন্দরে ভিড়িত। তখনকার সেই কুঠিবাড়ি ঘাট এখনও রহিয়াছে। সেই ঘাটে এখনও সহজে জাহাজর বা ষ্টিমার ভিড়িত পারে।
সূত্র: দৈনিক আজাদ, ৫ এপ্রিল ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত