আগামী ২৩শে জুন বিশ্ব খাদ্য কাউন্সিলের বৈঠক
উৎপাদনকারী দেশগুলাে হতে এক কোটি টন খাদ্যের প্রতিশ্রুতি লাভের সম্ভাবনা
নবগঠিত বিশ্বখাদ্য কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক এরূপ পূর্বাভাষ দিয়েছেন যে, আগামী ২৩শে জুন কাউন্সিলের প্রথম বৈঠক অনুষ্ঠিত হবার সময় বিশ্বের প্রধান উৎপাদনকারী দেশগুলাের কাছ থেকে সর্বমােট এক কোটি টন খাদ্যের প্রতিশ্রুতি পাওয়া যাবে। এ খাদ্য সুবিধাজনক সাহায্য হিসেবে অভাবগ্রস্ত দেশগুলােতে পাঠানাে হবে।
ড: জন হ্যানা গতকাল জাতিসংঘে সাংবাদিকদের বলেন, যুক্তরাষ্ট্র একাই ৫০ থেকে ৫৫ লাখ টন খাদ্য প্রদানের প্রস্তাব দিয়েছে। প্রতিশ্রুতিদানকালী অন্যান্য দেশের মধ্যে রয়েছে কানাডা ১০ লাখ টন, অষ্ট্রেলিয়া ৫ লাখ টন এবং পশ্চিম ইউরােপীয় দেশগুলাে সমবেতভাবে ১৭ থেকে। ২২ লাখ টন। | ড: হ্যানার ধারণা অন্যান্য দেশ বাকী অংশ পূরণ করবে। এ প্রসঙ্গে তিনি সােভিয়েত ইউনিয়ন, গণচীন ও আর্জেন্টিনার মতাে কয়েকটি ধান উৎপাদনকারী দেশের নাম উল্লেখ করেন।
মার্কিন আন্তজাতিক উন্নয়ন সংস্থার প্রাক্তন প্রধান উল্লেখ করেন, গত নভেম্বর মাসে রােমে অনুষ্ঠিত বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে বিশ্ব খাদ্য কাউন্সিল গঠিত হয়।
সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ঐ সম্মেলনের উল্লেখযােগ্য দিক হচ্ছে ওতে ১শ ৩৩ টি দেশ যােগদান করেছিল, তারা বিভিন্ন ও বহুবিধ অভিমত ব্যক্ত করেছে এবং তারা সর্বসম্মতিক্রমে ঐরূপ বিশ্বাস নিয়ে করেছে যে, তারা এখন এক পর্যায়ে উপনীত হবে যেখানে গরীব দেশগুলাের ক্ষুধার্ত জনগণের অন্ন সংস্থানের মতাে মৌলিক সমস্যার চেয়ে বিশ্বের সামনে আর কোন বড় সমস্যা থাকবে না।
রােম সম্মেলন এ বিশ্বাসকে কার্যকরী করার জন্যে বিশ্ব খাদ্য কাউন্সিলের উপর দায়িত্ব দেয়। বিশেষ করে আগামী তিন বছরের জন্যে সুবিধাজনক সাহায্য হিসেবে প্রতি বছর ১ কোটি টনের মতাে খাদ্য সংগ্রহ করা, এরপর ৬ কোটি টন বিশ্ব খাদ্য মজুত গড়ে তােলা এবং দীর্ঘ মেয়াদী ভিত্তিতে খাদ্য ঘাটতি দেশগুলাের কৃষি উৎপাদন বাড়ানাের জন্যে কাউন্সিরকে নির্দেশ দেওয়া হয়।
ড: হ্যানা বলেন, সম্মেলনের এ বিশ্বাস জন্মেছিলাে যে জাতিসংঘের অঙ্গ সংস্থাগুলােকে। এমনভাবে সক্রিয় করে তােলা প্রয়ােজন যাতে তারা সাহায্যকারী উন্নত দেশগুলাের প্রচেষ্টার মধ্যে সমন্বয় সাধনের ব্যাপারে সাধ্যমত প্রভাব খাটাতে পারে। অন্যথায় খাদ্য সম্মেলন থেকে একটি রিপােট ছাড়া আর কিছুই আশা করা যাবে না।
কাউন্সিলের কর্তব্য ব্যাখ্যা করে তিনি বলেন, এর প্রধান কর্তব্য হচ্ছে দরিদ্র দেশগুলাে যাতে তাদের নিজস্ব খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারে সে ব্যাপারে তাদের বােঝানাে এবং প্রয়ােজনীয় সাহায্য দান করা। তিনি বলেন, স্থায়ী সমাধানের এটাই একমাত্র পথ।
সূত্র: সংবাদ, ১৪ মার্চ ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত