সংবিধানের যে ধারা বলে জাতীয় দল গঠন করা হইয়াছে
দেশে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির সরকার ও একটিমাত্র রাজনৈতিক দল গঠনের উদ্দেশ্যে গত ২৫শে জানুয়ারি জাতীয় সংসদের অধিবেশনে বাংলাদেশের সংবিধানের ৪র্থ সংশােধনী পাস করা হয়। সংশােধনীতে জাতীয় দল সম্পর্কে বলা হয়:
১১৭-ক। জাতীয় দল। (১) রাষ্ট্রপতির নিকট যদি সন্তোষজনকভাবে প্রতীয়মান হয় যে, এই সংবিধানের দ্বিতীয়ভাগে বর্ণিত রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিসমূহের কোন একটা পরিপূর্ণভাবে কার্যকর করিবার উদ্দেশ্যে অনুরূপ করা প্রয়ােজন, তাহা হইলে তিনি, আদেশ দ্বারা, নির্দেশ দিতে পারিবেন যে রাষ্ট্রে শুধু একটা রাজনৈতিক দল (অতঃপর জাতীয় দল নামে অভিহিত) থাকিবে।
(২) যখন (১) দফার অধীন কোন আদেশ প্রণীত হয়, তখন রাষ্ট্রের সকল রাজনৈতিক দল ভাঙ্গিয়া যাইবে এবং রাষ্ট্রপতি জাতীয় দল গঠন করিবার জন্য প্রয়ােজনীয় সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।
(৩) জাতীয় দলের নামকরণ, কাৰ্যসূচী, সদস্যভুক্তি, সংগঠন, শৃঙ্খল, অর্থ সংস্থান এবং কর্তব্য ও দায়িত্ব সম্পর্কিত সকল বিষয় রাষ্ট্রপতির আদেশ দ্বারা নির্ধারিত হইবে।
(৪) (৩) দফার অধীন রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত আদেশ সাপেক্ষ, প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত কোন ব্যক্তি জাতীয় দলের সদস্য হইবার যােগ্য হইবেন।
(৫) এই সংবিধানে যাহা বলা হইয়াছে তাহা সত্ত্বেও যখন জাতীয় দল গঠিত হয়, তখন কোন ব্যক্তি (ক) যদি তিনি, যে তারিখে জাতীয় দল গঠিত হয়, সেই তারিখে সংসদ সদস্য থাকেন, তাহা হইলে তিনি রাষ্ট্রপতি কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাতীয় দলের সদস্য না হইলে সংসদ সদস্য থাকিবেন না এবং সংসদে তাহার আসন শূন্য হইবে।
(খ) যদি তিনি জাতীয় দলের দ্বারা রাষ্ট্রপতি বা সংসদ সদস্য নির্বাচনে প্রার্থীরূপে মনােনীত না হন, তাহা হইলে অনুরূপ নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি বা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হইবার যােগ্য হইবেন না।
(গ) জাতীয় দল ছাড়া অন্য কোন রাজনৈতিক দল গঠন করিবার বা অনুরূপ দলের সদস্য হইবার কিংবা অন্যভাবে অনুরূপ দলের কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করিবার অধিকার প্রাপ্ত হইবেন না।
(৬) এই অনুচ্ছেদের অধীন প্রণীত কোন আদেশ পরবর্তী কোন আদেশ দ্বারা প্রত্যাহার না হওয়া। পর্যন্ত বলবৎ থাকিবে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ২৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত