You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাংলা একাডেমীতে আলােচনা সভা
মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পের উন্নতি ছাড়া সংস্কৃতির বিকাশ সম্ভব নহে

‘শিল্প-সংস্কৃতিকে যদি কোন জাতির দর্পণ বলা হয়, তবে সেই দর্পণের অবিভাজ্য উপাদান হইতেছে মুদ্রণ ও প্রকাশনা-শিল্প। মুদ্রণ ও প্রকাশনা-শিল্পের উন্নতি ছাড়া সাংস্কৃতিক উন্নতি সম্ভব নহে।’
মহান একুশে উপলক্ষে বাংলা একাডেমীর সপ্তাহব্যাপী কর্মসূচীর তৃতীয় দিনে গতকাল (সােমবার) বাংলাদেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনা-শিল্প’ শীর্ষক প্রবন্ধে জনাব শামসুল হক এই অভিমত প্রকাশ করেন।
আলােচনায় অংশ নেন: কবি মইনউদ্দিন, জনাব মােহাম্মদ সফিউল্লাহ, জনাব এম এ, মােহাইমেন, জনাব তাজুল ইসলাম, মি: জওহরলাল সাহা ও মি: চারুচন্দ্র চক্রবর্তী (জরাসন্ধ) সভাপতিত্ব করেন জনাব আবদুল গনি হাজারী।
জনাব শামসুল হক তাহার প্রবন্ধে আরও বলেন, পুঁজি, উদ্যম এবং পরিকল্পনার অভাবে মুদ্রণ ও প্রকাশন শিল্প অন্যাবধি আমাদের দেশে কুটির শিল্পের পর্যায়েই রহিয়া গিয়াছে।
সভাপতির ভাষণে জনাব আব্দুল গনি হাজারী বলেন, পাঠকের ক্ষেত্র সম্প্রসারণ না হইলে শুধুমাত্র মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পক্ষেত্রেই নহে, যে ভাষায় পুস্তক প্রকাশিত হয় উহারও সংকট দেখা দিবে। দেশে বই পাঠকের শ্রেণী বিভাগ সম্পর্কে ‘রিডার্সশীপ সার্ভে’র প্রয়ােজনীয়তার উপর তিনি বিশেষ গুরুত্ব আরােপ করেন। জনাব হাজারী দুঃখ প্রকাশ করিয়া বলেন, শিশুদের জন্য যে সকল পাঠ্য পুস্তক ছাপা হয়, সেগুলিও হাতে লইয়া দেখিতে ইচ্ছা হয় না।
কবি মইনউদ্দিন বলেন, কাগজ ও প্রিন্টিং সরঞ্জামাদির মূল্য বৃদ্ধির ফলে প্রকাশনাশিল্প আজ ধ্বংসের মুখােমুখী।
জনাব সফিউল্লাহ বলেন, বাজার সৃষ্টির যে কৌশল তাহা প্রয়ােগ না করার ফলে বাংলাদেশের পুস্তক বিশ্বের কোথাও এমনকি বাংলা ভাষাভাষী প্রতিবেশী রাষ্ট্রেও বাজার সৃষ্টি করিতে পারে নাই।
মি: জরাসন্ধ তাঁহার ভাষণে বলেন, মুদ্রণ শিল্প শুধুমাত্র কারুশিল্প নহে ইহা একটি চারু শিল্পও বটে। মুদ্রণ ও প্রকাশনা শিল্পের উৎকর্ষ সাধনে তিনি রাইটার্স গিল্ড’ গঠনের প্রয়ােজনীতা ব্যাখ্যা করেন। আলােচনা শেষে ‘বহিপীর’ নাটকটি মঞ্চস্থ হয়।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!