রেশন সামগ্রীর কালােবাজারী রােধে জরুরী আদেশ জারী
সরকার গতকাল (শুক্রবার) রেশন সামগ্রীর কালােবাজারী ও অন্যান্য দুর্নীতিতে লিপ্ত অবাঞ্ছিত ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি বিধানের ব্যবস্থাসম্বলিত জরুরী আদেশ জারি করিয়াছেন।
খাদ্য ও বেসামরিক সরবরাহ মন্ত্রণালয়ের এক প্রেস নােটে বলা হয় যে, খাদ্যশস্য লইয়া এক শ্ৰেণীর ব্যবসায়ী ও ঠিকাদারের দুর্নীতিমূলক তৎপরতা নির্মূল করার উদ্দেশ্যে জরুরী ক্ষমতা আইনের অধীনে এই আদেশ জারি করা হইয়াছে।
এই আদেশবলে দেশের পাঁচটি বিধিবদ্ধ রেশনিং এলাকার বাহিরে রেশন সামগ্রী লইয়া যাওয়া নিষিদ্ধ করা হইয়াছে।
চুরি এবং অসদুদ্দেশ্য লইয়া খাদ্যগুদাম অথবা খাদ্যশস্য উঠানাে-নামানাে হইতেছে এমন স্থানে ঘুরাফিরা করাও নিষিদ্ধ করা হইয়াছে।
কোন ব্যক্তি কিংবা রেশন ডিলার কর্তৃক ভুয়া রেশন কার্ড রাখা, অনুপস্থিত রেশন কার্ড মালিকের রেশন সামগ্রী উঠান, কোন রেশন ডিলার কর্তৃক ওজনে কম দেওয়া অথবা রেশন সামগ্রীর কালােবাজারী প্রভৃতি কার্যকলাপ শাস্তিযােগ্য বলিয়া আদেশে উল্লেখ করা হইয়াছে।
বেকারী ইত্যাদি ধরনের ভুয়া প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান উৎখাত এবং এই সকল প্রতিষ্ঠানের প্রাপ্য রেশন সামগ্রী যথাযথ ব্যবহার নিশ্চিত করার ব্যবস্থাও গ্রহণ করা হইয়াছে।
চলতি সালের খাদ্য সংগ্রহ অভিযান সংক্রান্ত ব্যাপারে নির্ধারিত পরিমাণ দেয় চাউল কিংবা ধান সরবরাহে বিলম্ব অথবা বাধা সৃষ্টি করিলে তাহা শাস্তিযােগ্য হইবে বলিয়া আদেশে উল্লেখ করা হইয়াছে।
খাদ্যশস্য চলাচলে নিয়ােজিত পরিবহনকারীদের নিকট প্রদত্ত খাদ্যশস্য যথাসত্বর প্রাপকের নিকট দিতে হইবে।
সংশ্লিষ্ট সকলকে আইন মান্য করিয়া এবং কোন ধরনের দুর্নীতির আশ্রয় না লইয়া কর্তব্য সম্পাদন এবং যথাযথ ও কঠোর ভাবে ব্যবসায় পরিচালনার জন্য পরামর্শ দেওয়া হইয়াছে।
কালােবাজারী ও অন্যান্য দূর্নীতি দমনে সরকারের প্রচেষ্টার সহযােগিতা করার জন্য জনসাধারণকে বেআইনী লেন-দেন অথবা খাদ্য বিভাগের সহিত সংশ্লিষ্ট কর্তব্যরত কোন ব্যক্তির অবৈধ তৎপরতার ঘটনা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে যথাসম্ভুর জানানাের জন্য অনুরােধ জানান হইয়াছে।
এই আদেশের যে-কোন বিধান ভঙ্গকারীকে ৫ বৎসর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং তৎসহ জরিমানা করা যাইবে বলিয়া প্রেসনােটে উল্লেখ করা হইয়াছে।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত