জয়পুরহাট সিমেন্ট কারখানায়
পরবর্তীকালে আরও প্রমাণিত হয় যে, ভূপৃষ্ঠের নিয়ে প্রায় ৬ বর্গ মাইল এলাকায় চুনা পাথরের স্তর রহিয়াছে। চুনা পাথরের এই স্তরের ঘনত্ব প্রায় দুইশত ফুট বলিয়া অনুমান করা হইয়াছে।
প্রসঙ্গত: উল্লেখযােগ্য যে, জয়পুরহাটে চুনা পাথরের সন্ধান লাভের পর প্রাক-স্বাধীনতা আমলে পশ্চিম জার্মানীর মেসার্স ফ্রাইভ ক্রুপ রুহসটোফ (Fried Krupp Rohostoffe) কোম্পানী জয়পুরহাট চুনাপাথর ও সিমেন্ট কারখানা স্থাপনের জন্য সম্মত হইয়াছিল। উক্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী কারখানা স্থাপিত হইলে বার্ষিক দশ লক্ষ টন চুনা পাথর ও ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টন সিমেন্ট উৎপাদিত হইত।
বর্তমানে বাংলাদেশে বার্ষিক প্রায় ১৪ লক্ষ টন সিমেন্টের প্রয়ােজন রহিয়াছে।
অথচ বাংলাদেশের ছাতক সিমেন্ট ফ্যাক্টরীতে বার্ষিক দেড় লক্ষ টন ও চট্টগ্রাম সিমেন্ট ফ্যাক্টরীতে বার্ষিক ৩০ হাজার টন সিমেন্ট উৎপাদিত হইতে পারে। দেশের উন্নয়নকার্য পুরােপুরি শুরু হইলে ১৯৮০ সালে দেশে অন্যূন ২০ লক্ষ টন সিমেন্টের প্রয়ােজন হইবে।
জয়পুরহাট সিমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন করিতে ৫৫ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার প্রয়ােজন হইবে।
প্রাক স্বাধীনতা আমলে এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নের জন্য প্রয়ােজন হইত ৩৩ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। আন্তর্জাতিক বাজারে যন্ত্রপাতির মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার প্রকল্প বাস্তবায়নের ব্যয় বৃদ্ধি পাইয়াছে। এই ব্যয় বৃদ্ধির পরেও যদি অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে জয়পুরহাট সিমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়িত হয়, তাহা হইলে সিমেন্ট আমদানী খাতে দেশের প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা রক্ষা পাইবে। কারণ পরিকল্পিত জয়পুরহাট সিমেন্ট কারখানার বার্ষিক ৬ লক্ষ ৬০ হাজার টন সিমেন্ট উৎপাদিত হওয়া সম্ভব।
বর্তমান বাজার দরেও এই সিমেন্টের মূল্য দাঁড়াইবে প্রায় ১৮ কোটি টাকা।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ১২ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত