রফতানী সংক্রান্ত স্থবিরতা দূরকরণের আহ্বান
৩রা ফেব্রুয়ারি-চট্টগ্রাম শিল্প ও বণিক সমিতির সভাপতি জনাব এ, এম, জহিরউদ্দিন খান সরকারের প্রতি দেশের রফতানী বৃদ্ধি ও বিভিন্ন কারণে রফতানী খাতে সৃষ্ট স্থবিরতা দূরকরণের জন্য একটি উদ্দীপনামূলক ব্যবস্থা উদ্ভাবনের আহ্বান জানাইয়াছেন।
জনাব খান নয়া আমদানী নীতি সম্পর্কে আজ এখানে আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ভাষণদানকালে বলেন, নয়া নীতিতে আমদানী খাতে মােট বরাদ্ধের পরিমাণ হইতেছে ২ শত কোটি টাকা। ইহার মধ্যে দেশের উপার্জিত বৈদেশিক মুদ্রার পরিমাণ ৭২ কোটি টাকা মাত্র।
ইহা আমাদের আমদানী খাতে মােট আয়ের শতকরা ২৪ ভাগ মাত্র যাহা আমাদের রফতানী খাতে বিরাট ঘাটতির প্রমাণ দেয়। জনাব খান রফতানী খাতের সমস্যাদি সম্পর্কে প্রায়ােগিক দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, আভ্যন্তরীণ মূল্য, উৎপাদন ব্যয় ও প্রতিযােগিতামূলক রফতানী মূল্যের মধ্যে বিরাট ফাক থাকায় রফতানীর কতিপয় খাতে নগদ ভর্তুকির নীতি ও উহার কার্যকারিতা হারাইয়া ফেলিয়াছে। ভর্তুকির পদ্ধতি হিসাবে দুই পর্যায়ের বিনিময় হার (রফতানী খাতের জন্য অগ্রাধিকারভিত্তিক হার) হইবে কার্যত: নগদ ভর্তুকি। উহা হইবে অনমনীয় প্রকৃতির। উহাতে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা থাকিবে ও উহা সরকারী কোষাগারের উপর একটি প্রত্যক্ষ বােঝা হইয়া দাঁড়াইবে। তিনি তিনটি পরিবর্তনসহ বর্তমান রফতানী লাইসেন্স প্রণয়নের পরামর্শ দেন। পরিবর্তন ৩টি হইতেছে: (১) রফতানী অধিকার হস্তান্তরযােগ্য হইতে হইবে, (২) রফতানী অধিকারে কেবল রফতানীমুখী শিল্পখাতে আবশ্যক পণ্য থাকিলেই চলিবে না, বাণিজ্যিক ও ভােগ্যপণ্যও থাকিতে হইবে এবং (৩) রফতানী অধিকার এমন সকল খাতে প্রবর্তন করিতে হইবে, যেখানে সরকার ভর্তুকির আবশ্যক বােধ করেন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত