চট্টগ্রামের উন্নয়ন পরিকল্পনা অবাস্তব হইয়া পড়িয়াছে
কনসালট্যান্ট মহাপরিকল্পনাটির মােটামুটি পর্যালােচনা করিয়া উহার ব্যাপক রদবদলের সুপারিশ করিলেও সেই সব সুপারিশ অদ্যাবধি কার্যকরী করার ব্যবস্থা করা হয় নাই। বর্তমানে ঐ সব সুপারিশ এমনি ধামাচাপা পড়িয়াছে যে, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারংবার তাগিদ দিয়াও ঐ সব বাহির করিতে পারেন নাই। এমন কি চট্টগ্রাম মহাপরিকল্পনার আশু পর্যালােচনা ও উহার প্রয়ােজনীয় রবদবদলের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বারংবার সুপারিশ করিয়াও নাকি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় হইতে কোন সাড়া পাইতেছেন না।
মহাপরিকল্পনার অন্যান্য প্রধান বিষয়ের মধ্যে বেশ কয়েকটি বড় বড় মার্কেট এবং সবুজ এলাকা সৃষ্টি করার সুপারিশ ছিল। কিন্তু কালের প্রবাহে আমাদের দেশের অর্থনৈতিক সামর্থ্য সংকুচিত এবং বিনিয়ােগ দৃষ্টিভঙ্গীর পরিবর্তন হওয়ায় নতুন মার্কেট আর তৈয়ার করা সম্ভব হইতেছে না এবং সবুজ এলাকা সৃষ্টি করা অন্তত এখন সম্ভবপর নহে। তথাপি, এই দুই উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম শহরের বিভিন্ন স্থানে গৃহ বা অন্যকোন ইমারত নির্মাণের উপর যে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হইয়াছিল, তাহা এখনও বলবৎ রহিয়া গিয়াছে। ফলে এইসব এলাকায় একদিকে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ কিছু করিতেছেন না, অপরদিকে যাহারা এ সব জমির মালিক তাহাদেরও কোনাে নির্মাণকাজ করিতে দিতেছেন না। ফলে চট্টগ্রাম শহরের অভ্যন্তরে বিভিন্নস্থানে বিস্তর জায়গা উন্নয়ন মহাপরিকল্পনার বর্তমান কালানুপযােগিতার স্বাক্ষর হইয়া পড়িয়া রহিয়াছে। এইসব জমির মালিকেরা বলেন যে, হয় চট্টগ্রাম কর্তৃপক্ষ এই সব জমিতে অবিলম্বে কিছু করিবার ব্যবস্থা করুন, নতুবা তাহাদের সামর্থ্য অনুযায়ী বাসগৃহ নির্মাণের জন্য অনুমতি দিন।
সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত