You dont have javascript enabled! Please enable it!

ভেজাল ভােজ্য তেলের কারণে

বর্তমানে দেশের প্রায় দেড় কোটি লােক খুজলী, পাঁচড়া ও বিখাউজ ধরনের বিভিন্ন প্রকার চর্মরােগে ভুগিতেছে।
কয়েকজন চর্মরােগ বিশেষজ্ঞ অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন যে, ভেজাল ভােজ্যতৈল ব্যবহারের ফলেই ব্যাপকভাবে এই ধরনের চর্মরােগ প্রসার লাভ করিতেছে।
বিশেষজ্ঞ মহল অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন যে, ভেজাল ভােজ্য তৈল ব্যবহারের ফলে শুধু চর্মরােগেই প্রসার লাভ করে নাই-বরং অল্পবয়স্ক ছেলেমেয়েদের মধ্যে পেটের পীড়া, আমাশয় ও দৃষ্টিহীনতা ইত্যাদি রােগেরও প্রকোপ দেখা যাইতেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখযােগ্য, দেশে বর্তমানে ভেজালবিহীন ভােজ্য তৈল পাওয়া প্রায় দুষ্কর হইয়া উঠিয়াছে।
প্রকাশ, অর্থগৃধনু একটি সংঘবদ্ধ দল ভােজ্য তৈল বিশেষ করিয়া সরিষার তৈলে ব্যাপক ভেজাল মিশ্রিত করিয়া টাকার পাহাড় গড়িতেছে। | অতি সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জ হইতে বি, ডি, আর বাহিনীর জোয়ানরা অত্যন্ত প্রশংসনীয়ভাবে বহু ভেজাল সরিষার তৈল উদ্ধার করিতে সমর্থ হইয়াছে। শুধু ভেজাল তৈলই নহে বি, ডি, আর বাহিনী ভেজাল প্রদানের কেমিক্যাল ‘গডডােও উদ্ধার করিয়াছে।
জানা গিয়াছে যে, ‘গডডাে’ অত্যন্ত মারাত্মক ধরনের রাসায়নিক। একটিন ভর্তি ভেজাল তৈলে এক ফোটা ‘গডডাে’ প্রদান করিলেই উক্ত তৈলে খাঁটি সরিষার তৈলের ঝুঁজ পাওয়া যাইবে। ইহার পর কিছু পরিমাণ এক ধরনের রঙ্গীন গুড়া মিশাইলে উক্ত ভেজাল তৈল “খাটি সরিষার” তৈলে পরিণত হয়।
বিশেষজ্ঞ মহল অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন যে, এই ভেজাল সরিষার তৈল দীর্ঘদিন ব্যবহার করিলে চর্মরােগ, পেটের পীড়া ও দৃষ্টিহীনতায় আক্রান্ত হইতে বাধ্য। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত রিপাের্টে দেখা যায় যে, দেশের গ্রামাঞ্চলে কোন কোন এলাকায় ব্যাপকভাবে চর্মরােগ দেখা দিয়াছে।
ভেজাল ভােজ্য তৈল দীর্ঘদিন ব্যবহারই এই চর্মরােগের প্রাদুর্ভাবের কারণ বলিয়া বিশেষজ্ঞ মহল অভিমত প্রকাশ করিয়াছেন।

সূত্র: দৈনিক ইত্তেফাক, ৩ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত