You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.18 | শরণার্থীদের সম্পর্কে সুস্পষ্ট জাতীয় কর্মনীতি চাই বনগাঁর পরিস্থিতি সম্পর্কে ভূপেশ গুপ্তের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ | কালান্তর - সংগ্রামের নোটবুক

শরণার্থীদের সম্পর্কে সুস্পষ্ট জাতীয় কর্মনীতি চাই বনগাঁর পরিস্থিতি সম্পর্কে ভূপেশ গুপ্তের গভীর উদ্বেগ প্রকাশ
(স্টাফ রিপাের্টার)

কলকাতা, ১৭ জুলাই বিভিন্ন শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর আজ কমিউনিস্ট নেতা শ্রীভূপেশ গুপ্ত বিশেষভাবে বনগাঁ-র পরিস্থিতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন।
এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, শরণার্থীদের ব্যাপারে কেন্দ্রের নির্দেশাবলী অস্পষ্ট। এবিষয়ে অবিলম্বে একটি সুস্পষ্ট জাতীয় কর্মনীতি নির্ধারণ করার জন্য তিনি দাবী জানান।
শ্রীগুপ্ত বলেন, একমাত্র বনগাঁয় শরণার্থীর সংখ্যা এখন সাড়ে ৪ লক্ষ, সমগ্র প্রশাসন পঙ্গু হয়ে পড়েছে। চিকিৎসার ব্যাপারেও চরম অব্যবস্থা ওষুধপত্র নেই, কলেরা রােগীর জন্য প্রয়ােজনীয় স্যালাইনের অভাবে ডাবের জল রােগীকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হচ্ছে।
অবিলম্বে বনগাঁ থকে শরণার্থীদের অপসারণের ব্যবস্থা করার দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, বাইরে শরণার্থীদের পাঠাবার জন্য প্রত্যহ কমপক্ষে তিনটি ট্রেনের ব্যবস্থা করা দরকার এবং সেই ব্যবস্থা সাপেক্ষে শরণার্থীদের ২৪ পরগনা জেলার অন্যত্র উঁচু জায়গায় থাকবার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া দরকার। বহু শরণার্থী ক্যাম্পে আশ্রয় পান নি। এবং ক্যাম্পের শরণার্থীদের র্যাশন দেওয়া হচ্ছে না। ক্যাম্প নির্মাণের কাজও দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে না। ফলে হাজার শরণার্থী অর্বননীয় অবস্থার মধ্যে পড়েছেন।
উদ্বাস্তুদের নিয়ে “হা-হুতাশ চলছে, কিন্তু কোনও সুসজ্জিত কর্মসূচি নিয়ে কাজ হচ্ছে না” বলে শ্রীগুপ্ত মন্তব্য করেন।
বাঙলাদেশের উত্তর সীমান্তবর্তী রাজ্যে, বিশেষত মেঘালয়ে পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল। সরকার এখানে ঠিকমত কাজ করছে না। এমন কি মুক্তিসংগ্রামের নেতাদের গতিবিধির উপরে পর্যন্ত বাধানিষেধ আরােপ করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযাগ করেন।
তিনি বলেন, বাঙলাদেশ থেকে আসা মানুষদের মুক্তিসংগ্রামী হিসাবে গ্রহণ করা দরকার এবং তাদের মনােবল বজায় রাখবার জন্য একটি সুনির্দিষ্ট জাতীয় কর্মনীতি নিয়ে সর্বেভাব তাদের সহায়তা করা দরকার।

সূত্র: কালান্তর, ১৮.৭.১৯৭১