রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পে উৎপাদন বৃদ্ধি: চিনি রফতানী হবে
বাংলাদেশ চলতি অর্থ বছরে প্রাথমিক পর্যায়ে ১২ হাজার টন চিনি ও ২০ হাজার টন ঝােলা গুড় রফতানী করবে। সরকারি সূত্রে একথা জানা গেছে।
বাসসর এই খবরে প্রকাশ, ১২ হাজার টন চিনি রফতানির জন্যে প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা ইতিমধ্যেই নেওয়া হয়েছে এবং এ ব্যাপারে এ মাসের শেষ নাগাদ চুক্তি স্বাক্ষরের সম্ভাবনা রয়েছে। সম্প্রতি বিভিন্ন খাতের অধীনে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পসমূহের ষান্মাসিক পর্যালােচনাকালে ২০ হাজার টন ঝােলা গুড় রফতানীর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৭৩-৭৪ অর্থ বছরে উৎপাদিত ঝােলাগুড় থেকে এই রফতানী করা হবে। এই ২০ হাজার টনের মধ্যে রফতানীর জন্যে এ পর্যন্ত তিন হাজার ৩৩০ টন ঝােলাগুড় সংগৃহ করা হয়েছে।
এই সূত্র থেকে বলা হয় যে চলতি অর্থ বছরের প্রথমার্ধে সাত কোটি ৬১ লাখ টাকার জমানাে চিংড়ি, ব্যঙের ঠ্যাং, আদা, নীল চামড়া, রেয়ন সুতা, নিউজপ্রিন্ট ও কাগজ রফতানী করা হয়েছে।
ডিসেম্বর পর্যন্ত গত ছয় মাসে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পে উৎপাদনের হিসাব দিয়ে এই সূত্র বলেন, এই সময়ে ৪৮৯.৫৩ লাখ পাউন্ড সূতা ও ৪২৪.৬০ লাখ গজ কাপড় উৎপাদিত হয়েছে। এটা গত অর্থ বছরে এই সময়ে যে পরিমাণ সুতা ও কাপড় উৎপাদিত হয়েছে তার তুলনায় যথাক্রমে শতকরা পাঁচ ভাগ ও ন ভাগ বেশি। বস্ত্র শিল্প সংস্থার অধীনে গত অর্থ বছরে সুতা উৎপাদিত হয়েছে ৯১৩ লাখ পাউন্ড এবং কাপড় উৎপাদিত হয়েছে ৭৯৪ লাখ গজ।
১৯৭৪-৭৫ অর্থ বছরে জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত চিনি উৎপাদিত হয়েছে ৩৭ হাজার ৬৭৮ টন। গত অর্থ বছর এই সময়ে চিনি উৎপাদনের পরিমাণ ছিল ২৮ হাজার ৩৪২ জন উৎপাদন বেড়েছে শতকরা ৩৬ ভাগ।
এ সময়ে স্টীল ইস্ট উৎপাদন হয়েছে ৩৬ হাজার ৭০১ টন; ১৯৭৩-৭৪ ও ১৯৬৯-৭০ অর্থ বছরে এ সময়ে উৎপাদন হয়েছে যথাক্রমে ১৯ হাজার ৮১৯ টন ও ২৭ হাজার ৪৩৯ টন অর্থাৎ এই সময়ে স্টীল ইস্ট উৎপাদন ১৯৭৩-৭৪ ও ১৯৬৯-৭০ অর্থ বছরে এই সময়ের তুলনায় যথাক্রমে শতকরা ১৩৮ ভাগ ও ১৫৩ ভাগ।
কৃষি সরঞ্জাম খাতে এ সময়ে পাম্প উৎপাদন হয়েছে ৪৫৪১টি। এটা ১৯৭৩-৭৪ সালের ঐ সময়ের উৎপাদনের শতকরা ২৮৮ ভাগ। এ সময়ে সর্বকালের সর্বোচ্চ পরিমাণ ৪০৫২টি ডিজেল ইঞ্জিন উৎপাদন রয়েছে। এ সময়ে কেবলস উৎপাদন হয়েছে ১৮২ টন। এটা ১৯৭৩-৭৪ সালের এই সময়ের উৎপাদনের শতকরা ১২৮ ভাগ। ১৯৭৪ সালে জুলাই-ডিসেম্বর-এ খুলনা নিউজপ্রিন্ট মিলে নিউজপ্রিন্ট ও মেকানিক্যাল প্রিন্ট-এর উৎপাদন ১৩ ভাগ ৮৩৪ টনে উন্নীত হয়েছে। গত বছর এ সময়ে এর উৎপাদন ছিল ১২ হাজার ৬৩টন। এ সময়ে একমাত্র নিউজপ্রিন্টের উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ২১৮ টন। ১৯৭৩-৭৪ সালে এ সময়ে উৎপাদন হয়েছে ১২ হাজার ১৮ টন।
এ সময়ে কাঠ, পালুউড ও কাঠ কয়লার কাঠ সংগ্রহের পরিমাণ ১৪.৫৬ লাখ ঘনফুটে বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৩-৭৪ ও ১৯৬৯-৭০ সালের জুলাই-ডিসেম্বর-এ উৎপাদনের চেয়ে যথাক্রমে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ ও দুশ ভাগ বেশি। ১৯৭৩-৭৪ অর্থ বছরের উৎপাদনমাত্রার উপর। চেরাই কাঠ ও কাঠের তৈরি জিনিসের উৎপাদন বেড়েছে শতকরা প্রায় ১১০ ভাগ এবং ১৯৯-৭০-এর উৎপাদনমাত্রার উপর বেড়েছে শতকরা প্রায় ১২ শ ভাগ। এ সময়ে কাঁচা রবারের উৎপাদন এক লাখ ৬৮ হাজার পাউন্ডে বৃদ্ধি পায়। ১৯৭৩-৭৪ ও ১৯৬৯-৭০-এর এ সময়ে উৎপাদন হয়েছে। যথাক্রমে এক লাখ ২২ হাজার ৬১৪ পাউন্ড ও ২১ হাজার ৫৫ পাউন্ড।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ২৩ জানুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত