You dont have javascript enabled! Please enable it! 1975.01.20 | অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক সম্বর্ধনা- বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক উৎসাহব্যঞ্জক হয়েছে: হুইটলাম | দৈনিক বাংলা - সংগ্রামের নোটবুক

অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিক সম্বর্ধনা
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বৈঠক উৎসাহব্যঞ্জক হয়েছে: হুইটলাম

অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী মি: এডওয়ার্ড গফ হুইটলাম এবং প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রােববার সন্ধ্যায় পঁচাত্তর মিনিট স্থায়ী আলােচনা বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠক অনুষ্ঠিত হয় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায়। পরে মি: হুইটলাম অপেক্ষমান সাংবাদিকদের জনান যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট উল্লেখযােগ্য সংখ্যক দ্বিপাক্ষিক বিষয় এবং আন্তর্জাতিক ইসূ নিয়ে আলােচনা হয়েছে। মি: হুইটলাম বলেন, বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখােমুখি আন্তরিক এই আলােচনায় তিনি অত্যন্ত আনন্দিত হয়েছেন। অস্ট্রেলিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে বিদ্যমান অত্যান্ত ভালাে কার্যোপযােগী সম্পর্কের জন্য তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে অত্যান্ত উৎসাহব্যঞ্জক আলােচনা হয়েছে।
দুদিনের সফরে রােববার বিকেলে মি: হুইটলাম ঢাকা এসেছেন। সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় অনুষ্ঠিত হয় মি: হুইটলাম এর প্রথম কর্মসুচী বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে আলােচনা বৈঠক।
বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের কাছে মি: হুইটলাম প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ভূয়সী প্রশংসা করেন। তিনি বলেন-তিনি একজন জাতির জনকই শুধু নয় তিনি একজন মহান নেতা। তিনি উৎসাহ ও প্রেরণাদাতা।
বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে তার প্রথম বৈঠকের উল্লেখ করে তিনি বলেন,-১৯৭০ সালের আগস্ট মাসে অস্ট্রেলিয়া কমনওয়েলথ সম্মেলনে তারা প্রথম বৈঠকে মিলিত হন। তারপর থেকে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সঙ্গে গড়ে উঠেছে এক হার্দ্য সম্পর্ক।
মি: হুইটলাম বলেন, কমনওয়েলথ সম্মেলনের পরবর্তী সময় কালে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক ফোরাম সমুহে বহু বিষয়ের উদ্ভব হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে দুদেশের স্বার্থজড়িত বিভিন্ন ইসূ। মি: হুইটলাম বলেন,-পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমরা দুদেশ একত্রে কাজ করার সুযােগ পেয়েছি, অংশীদার হয়েছি পারস্পরিক স্বার্থজড়িত বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ইস্যুতে।
বাংলদেশে তার এই সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন,-আমি অত্যান্ত আনন্দিত হয়েছি। বাংলাদেশের মাটিতে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসার সুযােগ পেয়েছি। আন্তরিক পরিবেশে তার সঙ্গে মুখােমুখি সরাসরি আলাপ হয়েছে। মুখােমুখি এই আলােচনার মতাে আর উত্তম পন্থা আর কিছুই হতে পারে না।
আলােচনা বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন পরিকল্পনা কমিশনের ডেপুটি চেয়ারম্যান প্রফেসর নুরুল ইসলাম, প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি জনাব রুহুল কুদুস, পররাষ্ট্র সচিব জনাব ফখরুদ্দীন আহম্মদ, প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক উপদেষ্টা ডক্টর আব্দুস সাত্তার, পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের সচিব জনাব সায়েদুজ্জামান, অস্ট্রেলিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার জনাব এ এইচ এম এস কিবরিয়া এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক জনাব আব্দুল বারি।
অস্ট্রেলিয়ার পক্ষে মি: হুইটলামের সঙ্গে ছিলেন রাষ্ট্র দফতরের বিশেষ মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তাকারী মন্ত্রী মি: এল এক বােয়েন, বৈদেশিক বাণিজ্য দফতরের সচিব মি: ডি এইচ ম্যাকে, প্রধানমন্ত্রী ও ক্যাবিনেট দফতরের উপ-সচিব মি: জি জে ইন্দ্র, পররাষ্ট্র দফতরের উপ-সচিব মি: আর এ ওয়ালকট এবং বাংলাদেশে অস্ট্রেলিয়ায় হাইকমিশনার মি: রি জে জাড।

সূত্র: দৈনিক বাংলা, ২০ জানুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত