আন্তরিক সম্বর্ধনা
বিকেল চারটার কিছু পর ঢাকায় এলে মি: এডওয়ার্ড গফ হুইটলামকে আন্তরিক সম্বর্ধনা জানান হয়। সম্মানিত অতিথিকে বহনকারী ক্যাপ্টাস-এর বােয়িং ৭০৭ বিমানের সিঁড়ি বেয়ে তেজগাও বিমান বন্দরে নেমে এলে তাকে প্রথম স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। সিঁড়ি বেয়ে নেমে আসার সময় সম্বর্ধনা জানান হয় ১৯ বার তােপধ্বনির মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু। অতিথিকে মাল্যভুষিত করেন। মিসেস হুইটলাম ও তাদের কন্যাকে দেওয়া হয় ফুলের তােড়া।
এরপর তাদের তিন বাহিনী প্রধানের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। সম্মানিত অতিথি সুসজ্জিত মঞ্চে উঠে এলে তাকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌ-বাহিনীর কনটিনজেপ্টে গার্ড অব অনার প্রদান করে সামরিক ব্যান্ডে বাজানাে হয় দুদেশের জাতীয় সংগীত। এরপর গার্ড অব অনার পরিদর্শনের পর পরিচিতি পর্ব। বিমানবন্দরে মি: হুইটলামকে সম্বর্ধনা জানাতে এসেছিলেন মন্ত্রীপরিষদের সদস্যবৃন্দ, রাজনৈতিক নেতৃবর্গ এবং কুটনৈতিক মিশনের প্রতিনিধিবৃন্দ। এছাড়া ছিলেন স্থানীয় অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনের কর্মীবৃন্দ এবং ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান নাগরিকবৃন্দ।
মি: হুইটলামের সঙ্গে এসেছেন ৪২ সদস্যের একটি সফর সঙ্গী দল। এদের মধ্যে রয়েছেন তার পত্নী মিসেস মার্গারেট হুইটলাম, তার কন্যা মিস ক্যাথেরিন হুইটলাম, অস্ট্রেলিয়ার পার্টমেন্ট সদস্য এবং রাষ্ট্র দফতরের বিশেষ মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীকে সহায়তাকারী মন্ত্রী মি: এল এফ বােয়েন।
দীর্ঘকায় মি: হুইটলামের পরনে ছিল ফিকে আকাশনীল স্যুট। তাকে সফরে খানিকটা ক্লান্ত মনে হলেও তার মুখে ছিল সজীব হাসি।
বিমান বন্দর থেকে মােটর শােভাযাত্রা করে মি: হুইটলামকে নিয়ে আশা হয় রাষ্ট্রীয় অতিথিভবন পদ্মায়। পথের বিভিন্ন স্থানে নির্মিত হয়েছে তােরণ। পথ সজ্জিত ছিল দুদেশের জাতীয় পতাকায় বিমানবন্দর থেকে অতিথিভবন পর্যন্ত, পথের দুধারে বহু লােক সারিবদ্ধভাবে দাড়িয়ে সম্মানীত অতিথিকে সম্বর্ধনা জানায়। মােটরে মি: হুইটলাম এর সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মিসেস হুইটলাম এর সঙ্গে ছিলেন লেডী-ইন-ওয়েটিং বেগম সাজেদা চৌধুরী।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ২০ জানুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত