You dont have javascript enabled! Please enable it!

বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দৃঢ়ভাবে এগােচ্ছে

বিভিন্ন সেক্টর কর্পোরেশনের অন্তর্গত রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পসমূহের বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ দৃঢ়ভাবে এগােচ্ছে। শিল্পমন্ত্রী সৈয়দ নজরুল ইসলাম শনিবার একথা বলেন। গতকাল বাসস পরিবেশিত এক খবর প্রকাশ, শিল্পমন্ত্রী বাসসকে জানান যে, চট্টগ্রামে টিএসপি ফ্যাক্টরী এবং যশােরে রাজ টেক্সটাইল মিলস এ উৎপাদন শুরু করা হয়েছে। ঢাকার সাভারে অবস্থিত আফসার কটন মিলস এবং ফরিদপুরে অবস্থিত গােয়ালন্দ টেক্সটাইল মিলস এই নতুন কাপড়ের কল দুটোও শীগগীর চালু করা হবে। শিল্পমন্ত্রী বলেন, এছাড়া, ময়মনসিংহ, দিনাজপুর, বরিশাল, রাজশাহী ও কুমিল্লায় অবস্থিত আরও পাঁচটি কাপড়ের কলেও ইতিমধ্যেই হাত দেওয়া হয়েছে। আশা করা হচেছ, এসব ইউনিট ১৯৭৬-৭৭ সাল নাগাদ চালু হবে। শিল্পমন্ত্রী আগের দিন সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পসমূহের ৬ মাসের উৎপাদন পরিস্থিতি সম্পর্কে যে পর্যালােচনা হয় সে প্রসঙ্গেই এসব কথা বলেন। তিনি জানান, সিলেট পাম্প ও পেপার মিলটিতে আগামী তিন মাসের মধ্যে উৎপাদন শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। দেশে এ ধরনের মিল একমাত্র এটাই। অন্যান্য কয়েকটি প্রকল্পের অগ্রগতি প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে শিল্পমন্ত্রী জানান, মেশিন টুলস ফ্যাক্টরীতে ইতিমধ্যেই সেচের জন্য পাঁচ হাজার পাম্পিং সেট তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন সংস্থাকে সেগুলাে সরবরাহ করার কাজও শুরু হয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিএডিসি’র জন্য আরও দু’হাজার পাম্প তৈরির সম্ভাবনা রয়েছে। চট্টগ্রাম ড্রাইডকে যুগাে শ্লাভিয়ার বিশেষজ্ঞরা কাজ করছেন। এ প্রকল্পের কাজ শেষ হলে ড্রাই ডকিং ও সমুদ্রগামী জাহাজ মেরামত কার্যের পর্যাপ্ত সুযােগ সুবিধে সৃষ্টি হবে। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ডিজেল প্ল্যান্টের নির্মাণকাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছে। এত ডিজেল ইঞ্জিন সমাবেশ করার কাজ শুরু হয়েছে। গত ৬ মাসে এখানে ৪ হাজার ৫২ টি ডিজেল ইঞ্জিন তৈরি হয়েছে। জেনারেল ইলেকট্রিক ম্যানুফ্যাকচারিং প্ল্যান্ট এর প্রায় শতকরা ২০ ভাগ কাজ শেষ হয়ে গেছে বলে তিনি জানান। তিনি বলেন, নিমার্ণ কাজ ফরিদপুর চিনিকলের কাজ আগামী বছর নাগাদ শেষ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশ ফুড এন্ড এ্যালায়েড ইন্ডাস্ট্রীজ কর্পোরেশনের অধীনে ক্যাসমেকিং ও টিন প্রিন্টিং প্ল্যান্ট এবং একটি আধুনিক বেকারী নির্মাণের কাজ প্রাথমিক স্তরে রয়েছে। ট্যানারবীজ কর্পোরেশনের অন্তর্গত প্রথম চামড়া কমপ্লেকস নির্মাণের জন্য জমি ইতিমধ্যেই হুকুম দখল করা হয়েছে। নির্মাণকাজ শীগ্রি শুরু হবে। শিল্পমন্ত্রী জানান, আশুগঞ্জ… কেমিক্যাল কমপ্লেকস এর প্রথম পর্যায়ের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ১৯৭৮-৭৯’র কোন সময়ে এর কাজ শেষ হলে এখানে বছরে সর্বাধিক চার লাখ আট হাজার টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হবে। রফতানীমুখী আরেকটি সারকারখানার প্রাথমিক কাজও শুরু হয়েছে। এর বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা হবে সাড়ে সাত লাখ টন। কীটনাশক দ্রব্য উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশ সার, রসায়ন ও ভেষজ সংস্থা ও সিবাজিজির যৌথ উদ্যোগে একটি প্রকল্পও নির্মাণাধীন রয়েছে। একটি স্পঞ্জ আয়রন স্টীল কমপ্লেকস স্থাপনের সম্ভাব্যতা পর্যালােচনা ইতিমধ্যেই সম্পন্ন হয়েছে। আমদানীকৃত আকরিক লােহা ও দেশজ গ্যাসের ওপর নির্ভর করে এই কমপ্লেকস স্থাপিত হবে। আলােচ্য সময়ে চট্টগ্রাম ইস্পাত কারখানার চাহিদা মাফিক আধুনিকাকরণের সম্ভাব্যতা পর্যালােচনার কাজেও হাত দেওয়া হয়েছে।

সূত্র: দৈনিক বাংলা, ১৯ জানুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!