মে মাস থেকে ঘােড়াশাল
সার কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে
ঘােড়াশাল ইউরিয়া সার কারখানায় আগামী মে মাস থেকে পূনরায় উৎপাদন শুরু হবে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে এ সার কারখানার কন্ট্রোল রুম এক বিস্ফোরণে বিধ্বস্ত হওয়ার পর থেকে এখানে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।
ঘােড়াশাল সার কারখানার কন্ট্রেল রুম পুননির্মাণের সঙ্গে সঙ্গে আশুগঞ্জে আর একটি ইউরিয়া সার কারখানা নির্মাণের প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। আশুগঞ্জে ইতিমধ্যে প্রায় ১৬০ একর জমিতে মাটি ভরাটের কাজ শুরু হয়েছে। জানা গেছে আগামী নভেম্বরের মধ্যে মাটি ভরাটের কাজ শেষ হবে। ৭৯ সাল নাগাদ আশুগঞ্জ ইউরিয়া সার কারখানায় উৎপাদন শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশা করেছেন। এ সার কারখানায় দৈনিক ১৬০০ টন সার উৎপাদন হবে। একটি আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাসহ ৬টি পাশ্চাত্য সাহায্য সংস্থা এ সার কারখানা নির্মণে সহযােগিতা দেবে বলে জানা গেছে।
এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশের সহযােগিতায় চট্টগ্রামে এবং ভারতের সহযােগিতায় চাঁদপুরের কাছে ষাটনলে আরাে দুটি ইউরিয়া সার কারখানা নির্মিত হতে যাচ্ছে। ষাটনলে ইতিমধ্যে সার কারখানা স্থাপনের জন্যে জমি নেওয়া হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্রে প্রকাশ।
সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষ আশা করছেন ৮২ সাল নাগাদ এ সার কারখানাগুলাে নির্মাণ শেষ হবে। এগুলাে নির্মিত হলে বাংলাদেশে ঘােড়াশাল ও ফেচুগঞ্জসহ ইউরিয়া সার কারখানার সংখ্যা হবে পাঁচটি এবং টিএসপি সার কারখানা একটি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বলেছেন, ৬টি সার কারখানায় উৎপাদন শুরু হলে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ সারে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করবে এবং প্রতি একরে সার ব্যবহারের পরিমাণ দ্বিগুনের বেশি হবে। বর্তমানে বাংলাদেশে বছরে যে পরিমাণ সার পাওয়া যায়, তাতে আবাদী জমিতে প্রতি একরে ৫ কিলােগ্রাম ভাগে পড়ে। সার ব্যবহারের আন্তর্জাতিক মানের তুলনায় ৫ কিলােগ্রাম অত্যন্ত কম। মিসরে বছরে প্রতি একরে ৩৫ কিলােগ্রাম সার ব্যবহার করা হয়। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এক পরিসংখ্যানের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, সাধারণভাবে ১টন সার ব্যবহার করা হলে ৫ টন অতিরিক্ত ফসল পাওয়া যায়। অভ্যন্তরিণ চাহিদা পূরণ ছাড়াও বিপুল পরিমাণ সার বিদেশে রফতানীর প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ১১ জানুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত