You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.03.20 | অসহযোগ আন্দোলনের বিংশতিতম দিনে মুক্তি অর্জনের শপথ নিয়ে মিছিল যায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে - সংগ্রামের নোটবুক

২০ মার্চ ১৯৭১ঃ অসহযোগ আন্দোলনের বিংশতিতম দিনে

অহিংস অসহযোগ আন্দোলনের বিংশতিতম দিনে মুক্তি পাগল হাজার হাজার মানুষের দৃপ্ত পদচারণায় রাজধানী ঢাকা অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে। সর্বস্তরের মানুষের সম্মিলিত মিছিল ‘জয় বাংলা’, ‘জয় বঙ্গবন্ধু’ স্লোগান তুলে কেন্দ্রীয শহীদ মিনার অভিমুখে এগিয়ে চলে। সেখানে মুক্তি অর্জনের শপথ নিয়ে মিছিল যায় বঙ্গবন্ধুর বাসভবনে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষক, ঢাকার বিভিন্ন স্কুল শিক্ষকগন বায়তুল মোকাররমে এক সম্মিলিত সভায় বাংলাদেশ হতে সকল পশ্চিম পাকিস্তানী সৈন্য প্রত্যাহার করে তদস্থলে বাঙ্গালী সেনা মোতায়েনের দাবী জানানো হয়। সভায় যে সকল শিক্ষক এখনো খেতাব বর্জন করেননি তাদের কঠোর নিন্দা করে। পরে তারা মিছিল সহকারে শহীদ মিনারে গমন করে সমাবেশের সমাপ্তি টানেন। শহীদ মিনারে ঔষধ শিল্প কর্মচারী সমিতি সমাবেশ করে। সভা শেষে তারা ধানমণ্ডিতে শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাৎ করেন।  ইস্টার্ন ব্যাংকিং কর্পোরেশন, ন্যাশনাল ব্যাঙ্ক, পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রয় প্রতিস্থানের কর্মচারীরা মিছিল করে ধানমণ্ডিতে শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাৎ করেন।  সরকারী আধা সরকারী স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা বায়তুল মোকাররম মসজিদ প্রাঙ্গনে সমাবেশ করে। সভা শেষে তারা ধানমণ্ডিতে শেখ মুজিবের সাথে সাক্ষাৎ করেন।  বীমা কর্মচারীরা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ করে তারা সকল পশ্চিম পাকিস্তানী বিমা কোম্পানি সমুহ বাঙ্গালী ব্যবস্থাপনায় নেয়ার দাবী জানায়। বাংলা একাডেমীতে লেখক শিবির গণমুখী কবিতা পাঠের আয়োজন করে।  বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নেতা এমএনএ একে মুজিবুর রহমান আক্কেলপুরী, আকবর আলী খান, ও প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য মাহমুদুল হাসান খানের বাসভবনে বোমা হামলা হয়েছে। ঘটনার পর পর আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে ব্যাপক প্রহরার বেবস্থা নিয়েছে।  ১৯ মার্চ জয়দেবপুরে জারিকৃত কারফিউ দুপুর ১২টায় ৬ ঘন্টার জন্য প্রত্যাহার করা হয়। পরে সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পুনরায় কারফিউ বলবৎ করা হয়। সুপ্রিম কোর্টের প্রখ্যাত আইনজীবী ও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম কৌসুলী এ.কে.ব্রোহি সকালে করাচী থেকে ঢাকায় আসেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক সংগঠন আগামী ২৩ মার্চ প্রতিরোধ দিবসের কর্মসূচির প্রতি তাদের সমর্থন ঘোষণা করে। মগবাজারে মহিলা সংগ্রাম পরিষদের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত এক মহিলা সমাবেশে সেনাবাহিনীর প্রাক্তন বাঙালি সৈনিকদের নিয়ে একটি প্যারা-মিলিটারি গঠনের আহ্বান জানানো হয়।