ভেজাল ওষুধ: ৩ ব্যক্তির ১৪ বছর কারাদণ্ড
বুধবার ঢাকার সপ্তম স্পেশাল ট্রাইব্যুনালের জজ জনাব মাে: আজিজুর রহমান ভেজাল ওষুধ তৈরি করার দায়ে দোষী সাব্যস্ত করে তিন ব্যক্তিকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেন। বিশেষ ক্ষমতা আইনের ২৫ ধারা অনুযায়ী আসামী আলি হােসেন, আবদুল মান্নাফ ও হারিস মিয়াকে দন্ডাদেশ প্রদান করে। মাননীয় জজ তার রায়ে উল্লেখ করেন যে, আসামীরা গুরুতর ও ঘৃণ্য অপরাধে অপরাধী। কারণ সভ্য সমাজের কোন আইনেই তারা ভেজাল ওষুধ তৈরির মত ঘৃণ্য ব্যবসা করে জীবিকা নির্বাহের অধিকারী হতে পারে না। সুতরাং ভবিষ্যতে মানব সমাজের কল্যাণকল্পে অপরাধীদের মনে যাতে ভীতির সঞ্চার করতে পারে সেজন্য অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হলাে।
এই চাঞ্চল্যকর মামলায় বাদী পক্ষের অভিযােগের বিবরণে বলা হয়, গত ১৯৭৩ সালের ৩১শ জুলাই স্পেশাল ব্রাঞ্চের একজন সাব-ইন্সপেক্টরের নেতৃত্বে কেরানীগঞ্জ থানার কালিগঞ্জের ভেজাল ওষুধ তৈরি কারখানায় পুলিশ দল তল্লাশী চালিয়ে বিপুল পরিমাণ ভেজাল ডিস্টিলড ওয়াটারের এ্যাম্পুল আটক করে। ঘটনাস্থলে আবদুল মান্নাফ ও হারিস মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। আটককৃত ভেজাল এ্যাম্পুল রাসায়নিক পরীক্ষা করে বােঝা যায় এগুলাে গুরুতর রূপে স্বাস্থ্য হানিকর। সিআইডি ইন্সপেক্টর মি. সাহা ঘটনা তদন্ত শেষে আসামীদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। বিচারের সময় আসামী আলি হােসেন ট্রাইব্যুনালে আত্মসমর্পণ করেন। সরকার পক্ষে মােট দশজন সাক্ষী সাক্ষ্য প্রদান করেন ও আসামীরা নিজেদের নির্দোষ বলে দাবী করে। সাক্ষ্য প্রমাণ বিশ্লেষণ করে মাননীয় জজ আসামীদের কারাদণ্ড প্রদান করেন। সরকার পক্ষে এপিপি সােহরাব বখত ও আসামী পক্ষে এডভােকেট আবদুল মজিদ বারিস্টার, মােল্লা ফজলুল হক ভুইঞা ও রাবেয়া হক ভুইঞা মামলা পরিচালনা করেন।
সূত্র: দৈনিক বাংলা, ৯ জানুয়ারি ১৯৭৫
দিনলিপি বঙ্গবন্ধুর শাসন সময় ১৯৭৫ – অধ্যাপক ড. আবু সাইয়িদ ও শাহজাহান মৃধা বেনু সম্পাদিত