আর সময় নেই
অবশেষে ভারতও আক্রান্ত। স্বাধীন বাংলার মুক্তিযােদ্ধাগণ মুক্তিযুদ্ধের প্রচণ্ড আঘাতে বেসামাল ইয়াহিয়া যে শেষ পর্যন্ত মরণ কামড় দেবেন আর তার সেই মুক্তকচ্ছ মুহূর্তে প্রতিবেশী ভারতের সীমান্ত এলাকাগুলাের কোন কোন স্থানকে তার পরিণাম চিন্তাহীন স্পর্ধিত স্পর্শে কলংকিত করবেন, এ ধরণের আশংকা আমাদের বরাবরই ছিল। গত শনিবার ভারতের বনগাঁ সীমান্তে যেভাবে পশুরাজ ইয়াহিয়ার হিংস্র কুকুর বাহিনী হামলা করার সাহস দেখিয়েছে, তাতে আজ আর আগামীকাল চিন্তা করে দেখার সময় আছে বলেও মনে হয় না। পবিত্র ভারত ভূমির একটি ধূলিকণারও উপরও যদি কুৎসিত ব্যাধিগ্রস্ত জঙ্গী সরকারের ছায়ামাত্র পড়ে, তাহলে অর্বাচিনের রক্তে স্নান করে কলুষমুক্ত হওয়াই রাষ্ট্রীয় শাস্ত্রের অমােঘ বিধান। জোট পাকান, কূটনৈতিক প্রহসন চালিয়ে যাওয়া প্রচুর হয়েছে। উন্মাদকে মানুষের স্বাভাবিক ভাষায় বােঝানাের অপচেষ্টা যথেষ্ট হয়েছে। এবার সময় হয়েছে সেই ভাষা প্রয়ােগের যা ইতর প্রাণীর ভাষা প্রয়ােগ করে তুলতে হয়। লক্ষাধিক প্রাণের জন্য দায়ী ইয়াহিয়ার আজ এবং এখনি বিচারের প্রয়ােজন। সমগ্র সভ্যতার মুক্তাঙ্গনে ইয়াহিয়া আর তার দোসর ভুট্টোর জন্যে অবিলম্বে বিচার সভা বসানাে উচিত আর মৃত্যুদণ্ড ঘােষণা করে তা কাৰ্য্যকর করা উচিত। ভারতের দেহে কাণ্ডজ্ঞানহীন গােলাবর্ষণ করে ইয়াহিয়া প্রকৃতপক্ষে ভারতকেই সেই বিচারকের আসনে বসিয়েছে।
আর সময় নেই, ভারত সরকার স্বাধীন বাংলার বৈধ সরকারকে স্বীকৃতি দিয়ে জঙ্গী শাহীর শাস্তি বিধানে অগ্রসর হােন, জাতি তাই কামনা করে।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২৮ এপ্রিল ১৯৭১