সম্পাদকীয়: এই যুদ্ধে আমাদের জয় অনিবার্য
গত ৮ মাস ধরিয়া যে আশংকা করা হইতেছিল, তাহা শেষ পর্যন্ত প্রমাণিত হইয়াছে, পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ভারতের বিরুদ্ধে সর্বাত্মক যুদ্ধে নামিয়াছে। পাকিস্তানী এই হঠকারিতাকে মুখের দুঃসাহস বলিলেও কম বলা হয়, ‘৬৫তে দাঁতভাঙ্গা মার খাইয়াও তাহাদের শিক্ষা হয় নাই, আশা করা যায় এইবার তাহাদের রণতৃষ্ণাকে চিরতরে স্তব্ধ করিয়া দেওয়া যাইবে।
ভারতবর্ষ শান্তিপ্রিয় দেশ, কিন্তু এই শান্তিপ্রিয়তাকে যাহারা কাপুরুষতা ভাবে, তাহাদের আজ রক্তের মূল্যে সেই ভুলের মাশুল দিতে হইবে। সেই সঙ্গে তাহাদের সাম্রাজ্যবাদী এবং সাম্যবাদী মুরুব্বীদেরও শিক্ষা গ্রহণ করিতে পারেন। নিতান্ত মানবিক দায়িত্ব পালন করিতে গিয়া ভারতের ঘাড়ে এই যুদ্ধ যাহাদের প্রশ্রয়ে চাপাইয়া দেওয়া হইল, ইতিহাসের বিচারে তাহারা ঘৃণ্য অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত হইবেন। আমরা এই যুদ্ধ লড়িতেছি গণতন্ত্র, জাতীয়তা এবং মানবতার জন্য, কাজেই ন্যায় যুদ্ধে জয় আমাদের অনিবার্য।
সুযােগ্যা প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর নেতৃত্বে সমগ্র দেশ ও জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ এবং দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। মানবতা ও সভ্যতার শত্রু পাকিস্তানের সমূহ ধ্বংসের দিনটি কত দ্রুত আসিবে, তাহারই প্রতীক্ষায় আমরা দিন গুনিতেছি।
সূত্র: যুগশক্তি, ৩ ডিসেম্বর ১৯৭১