You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.09.22 | সম্পাদকীয়: দৃষ্টিহীনের দৃষ্টিপাত | দৃষ্টিপাত - সংগ্রামের নোটবুক

সম্পাদকীয়: দৃষ্টিহীনের দৃষ্টিপাত

পাকিস্তান কর্তৃক পর পর কয়েকটী অন্তর্ঘাতমূলক ঘটনার জন্য করিমগঞ্জ তথা কাছাড় জেলা এবং ত্রিপুরা রাজ্যের অধিবাসীদের মধ্যে উদ্বেগ বােধ করা স্বাভাবিক। অত্যন্ত সঙ্গতভাবেই কাছাড়ের বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় এই বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করিয়া সম্পাদকীয় প্রবন্ধ লিখা হইয়াছে এবং প্রায় সব প্রবন্ধেই এই রূপ মন্তব্য করা হইয়াছে যে, এই নাশকতামূলক কাজে স্থানীয় এক শ্রেণীর লােকেরও যােগসাজস আছে। এ পর্যন্ত যে সব লােককে এই সম্পর্কে গ্রেপ্তার করা হইয়াছে, তাহারা সকলেই সংখ্যালঘু অধ্যুষিত গ্রামের অধিবাসী বা এই সব গ্রামের নিরাপদ আশ্রয়ে বাস করিত। ইহাতে ইহাই প্রমাণিত হয় যে, এক শ্রেণীর ভারতীয় নাগরিকই এই সব দুষ্কৃতকারীকে মদত দিয়া আসিতেছে। তাই বলিয়া সকলকেই দোষী বলা যায় না, তাহাদের একটা বড় অংশই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত নন সেই কারণেই তাহাদের এই ব্যাপারে দলবদ্ধভাবে প্রতিকার ব্যবস্থায় উৎসাহিত হওয়া উচিত।

উত্তর করিমগঞ্জ আঞ্চলিক পঞ্চায়েতের সভাপতি শ্রীমৈনুল ইসলাম চৌধুরীকেও ধন্যবাদ জানাই যে, অবশেষে বহু বিলম্বে হইলেও তাহারই সভাপতিত্বে পাকিস্তান কর্তৃক এই সব নাশকতামূলক কাজের জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করা হইয়াছে। (আমরা তাহাদের প্রস্তাবের অনুলিপি পাই নাই, আকাশবাণীর সংবাদ পরিবেশন হইতে খবরটী জানা গেল) আর কি প্রস্তাবে বলা হইয়াছে জানি না, তবে এই প্রস্তাব অবশ্যই অন্যান্য গাঁওসভা ও পঞ্চায়েতের পক্ষে পথপ্রদর্শক। মাননীয় সভাপতি মহাশয়কে আমরা অনুরােধ করিব যে তাহারই এলাকার ভিতর বাস করিয়া যে সব পাকিস্তানী অনুচর নির্বিবাদে চোরাকারবারের ব্যবসা চালাইয়া আসিতেছে এবং ভারতীয় তৈল চিনি, সাদা, চুরুট, বিড়ি কেরসীন প্রভৃতি চোরা গুপ্তা পথে পাচার করিয়া ইয়াহিয়া গােষ্ঠীর সৈন্যদের রসদ জোগাইতেছে তাহা যেন তিনি অবিলম্বে বন্ধ করেন। এই বেআইনী ব্যবসার বিরাট কারবার আপনার সারা অঞ্চল জুড়িয়াই আছে বলিয়া অনেকের ধারণা। মাননীয় সভাপতি মহাশয় একটু চোখ কান খুলিয়া চলিলেই সব কিছু বুঝিতে পারিবেন।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১