You dont have javascript enabled! Please enable it!

সম্পাদকীয়: আমাদের দায়িত্ব

ভারত আজ এক সংকটের মুখােমুখি হইয়া চলিয়াছে। ভারত বরাবরই শান্তি, সম্প্রীতি সহাবস্থান এবং মিত্রতায় বিশ্বাসী। ভারত কাহারাে সঙ্গে বিরােধ কামনা করেনা এবং সম্প্রসারণ নীতি সমর্থন করেনা? প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সহিত মিত্রতা বজায় রাখিয়া চলা ভারতের নীতি। তৎসত্বেও আমাদের প্রতিবেশী পাকিস্তান ভারতকে ফাসাদে জড়াইয়া ফেলার জন্য উস্কানির ত্রুটি করেনা। পাকিস্তান তাহার নিজের অপকর্ম অনাচার, জুলুম এসব চাপা দেওয়ার জন্য ইচ্ছা করিয়াই ভারতের সঙ্গে ঠুকাঠুকি করতে প্রয়াসী হন। বিনা প্ররােচনায় ও কারণে ভারতের ত্রিপুরায়, কাছাড়ে, গােয়ালপাড়ায়, গারাে পাহাড়ে এবং পশ্চিমবঙ্গের কোন সীমান্তে গােলাগুলি বর্ষণ করিয়া ভারতকে সংঘর্ষে নামাইবার জন্য অপচেষ্টা করে। এমনকি ভারতের অভ্যন্তরে গুপ্তচর এবং পঞ্চম বাহিনীর সাহায্যে গােলযােগ সৃষ্টির চেষ্টা করিতেছে।
ভারত সরকার ও ভারতবাসী সর্বাবস্থায় সংঘর্ষ এড়াইয়া চলার যেমন পক্ষপাতী তেমনি আভ্যন্তরীণ : সম্প্রীতি অটুট রাখায় তৎপরও সচকিত।
ভারতের অগ্রগতী, ভারতের উন্নয়ন এবং ভারতকে সমাজবাদ প্রতিষ্ঠায় দৃঢ় পদক্ষেপ পৃথিবীর কায়েমী স্বার্থবাদী কোন কোন রাষ্ট্রের গাত্রদাহের কারণ হইয়া দাঁড়াইয়াছে তাই তাহারা চায় ভারতকে একটা ফাসাদে জড়াইয়া রাখা। ভারত সরকার ও ভারতের নেতৃবৃন্দ এ বিষয়ে ওয়াকিবহাল রহিয়াছেন।
ভারতের উপর গত চীনা ও পাকিস্তানী আক্রমণের সময় ভারতবাসী যেভাবে একতা ও মিলনের পরিচয় দিয়াছিল তাহা সত্য সত্যই গৌরবের বস্তু। বর্তমান উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘটনাবলী এবং দুঃখজনক পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে সর্বাবস্থায় আমাদের মধ্যে প্রীতি এবং পারস্পরিক সদিচ্ছা অটুট রাখা প্রধান কর্তব্য।
আমাদের মধ্যে যাহাতে পঞ্চম বাহিনীর ক্রিয়াকলাপ এবং অপপ্রচার অনুপ্রবেশ করিতে না পারে সে দিকে অবহীত থাকিয়া এবং আজগুবী গুজব এড়াইয়া চলিয়া ধীর হীরভাবে স্ব স্ব কাজ করিয়া যাওয়া আমাদের সকলেরই উচিত।।
ভারতের বর্তমাণ যুগ সন্ধিক্ষনে[ণ] এবং বাংলাদেশের ঘটনা পরম্পরায় আমাদের খুব হুশিয়ার হইয়া চলার প্রয়ােজনীয়তা সৰ্ব্বাধীক।

সূত্র: আজাদ, ২৮ জুলাই ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!