You dont have javascript enabled! Please enable it! 1972.01.12 | দিল্লীতে শেখ মুজিবের শুভাগমন | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

দিল্লীতে শুভাগমন

ইহার পর শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়া বৃটিশ রাজকীয় একখানা বিমান লণ্ডন হইতে ১০ জানুয়ারী সােমবার সকাল ৮ ঘটিকায় নির্দিষ্ট সময়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও বিশ্বের বিপ্লবী শ্রেষ্ঠ নায়ক নিপীড়িত ও নির্যাতিত মানবতার নয়নমণি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে লইয়া দিল্লীর পালাম বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতিকে বিমানবন্দরে ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রীভিভি গিরি, প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধী, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীবৃন্দ বিশিষ্ট রাজনৈতিক নেতৃবর্গ বৈদেশিক কূটনৈতিকবৃন্দ অভ্যর্থনা জ্ঞাপন করেন। বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি বিমানবন্দরে গার্ড অব অনার পরিদর্শন করেন। বিমানবন্দরে তাহাকে সম্বর্ধনা জ্ঞাপনের জন্য উপস্থিত প্রায় দশ লক্ষ জনতার উদ্দেশ্যে এক সংক্ষিপ্ত ভাষণ দানের পর বঙ্গবন্ধু রাজধানীতে . চলিয়া আসেন। অতঃপর তিনি রাষ্ট্রপতি শ্রীগিরি প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী গান্ধীর সহিত বহু সময় বাংলাদেশের অন্যান্য বিষয়ে আলােচনা করেন। ইহার পর রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে আয়ােজিত রাষ্ট্রপতি ভবনে এক ভােজে তাহাকে আপ্যায়িত করা হয়। ৪ ঘণ্টা দিল্লীতে অবস্থান করার পর তিনি বৃটিশ রাজকীয় বিমানবাহিনীর একখানা বিমানে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা অভিমুখে রওয়ানা হন।

ঢাকা বিমানবন্দরে
বেলা সােয়া একটার সময় উদ্ধাকাশে যখন নবজাত রাষ্ট্রের মহান নায়ক ও বাংলাদেশের সাড়ে সাত কোটী মানুষের নয়নের মণি শেখ মুজিবের বিমান দেখা যাইতেছিল তখন অপেক্ষমান লক্ষ লক্ষ উচ্ছ্বসিত জনতার বাংলাদেশ জিন্দাবাদ শেখ মুজিবুর রহমান জিন্দাবাদ ধ্বনিতে আকাশ বাতাস মুখরিত হইয়া উঠে। বিমান বন্দরে শেখ সাহেবের পিতা, পরিবারের অন্যান্য লােক অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রধানমন্ত্রী জনাব তাজউদ্দিন আহমদ, অন্যান্য মন্ত্রীবর্গ আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ ও বিশ লক্ষ জনতা তাদের নেতাকে স্বদেশে ফিরিয়া পাইয়া আকুলভাবে সংবর্ধনা জ্ঞাপন করেন। তখন অসংখ্য দেশী বিদেশী টেলিভিশন ক্যামেরাম্যান ফটো তুলিতে থাকেন। বৈদেশিক কতিপয় ক্যামেরাম্যান হেলিকপ্টারের সাহায্যেও ফটো তুলিতে থাকেন। বাংলাদেশের স্থল, বিমান ও নৌ বাহিনীর সামরিক অভিবাদন গ্রহণের পর বিমান বন্দরে উপস্থিত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সহিত পরিচিত হওয়ার পর শেখ সাহেব একখানা খােলা ট্রাকে ঢাকা অভিমুখে য ৩ মাইল দীর্ঘপথ ট্রাকে অতিক্রম করিতে ৩ ঘণ্টার অধিক সময় লাগিয়াছিল, কেন না রাস্তায় দুই পার্শ্বে অসংখ্য জনতা ফুলের মালা হস্তে তাহাদের প্রিয় নেতাকে দর্শনের জন্য ভীড় করিয়াছিল।

সূত্র: আজাদ, ১২ জানুয়ারি ১৯৭২