You dont have javascript enabled! Please enable it!

মুজিব-হত্যা মামলা মুজিবের বাসভবনের তৎকালীন রিসেপসনিস্ট কাম রেসিডেন্ট পিএ আ ফ ম মহিতুল ইসলাম দীর্ঘ একুশ বছর পর ২ অক্টোবর ১৯৯৬ ধানমন্ডি থানায় লিখিত এজাহারের মাধ্যমে মামলা রুজু করেন। মামলা নম্বর ধানমণ্ডি ১০ (১০) ৯৬। বাদির জীবনের নিরাপত্তা এবং নানাবিধ প্রতিকূল অবস্থার কারণে এই ঘটনার এজাহার করতে বিলম্ব হয়। ঘটনার পর থানায় গেলে এজাহার না নিয়ে বাদিকে বলা হয়, ‘তুই নিজে মরবি, আমাদেরকেও মারবি, এখন চলে যা, অনুকূল পরিস্থিতি আসলে তখন এজাহার করিস। আদালতে জেরার জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এএসপি আব্দুল কাহার আকন্দ জানান : পঁচাত্তরের নির্মম হত্যাকাণ্ডগুলাের ব্যাপারে পৃথক মামলা হয়েছে ৫টি। এগুলাে হচ্ছে, ১৫ আগস্টে বঙ্গবন্ধুর বাসভবনের হত্যাকাণ্ড, ধানমণ্ডিতে শেখ মণির বাসার হত্যাকাণ্ড, মন্ত্রিপাড়ায় আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের বাসার হত্যাকাণ্ড, কামানের গােলায় মােহাম্মদপুরে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড ও ৩ নভেম্বরে জেল হত্যাকাণ্ড।নিরাপত্তা প্রতিবিধান (ইনডেমনিটি) অধ্যাদেশ মুজিব হত্যার ষড়যন্ত্রকারী, হত্যাকারী ও সুবিধাভােগীরা নিজেদের আইনের আওতামুক্ত রাখার জন্য হত্যাকাস্ত্রে পর পরই সামরিক আইন জারি করে। পরে যখন বুঝতে পারে হত্যার দায় থেকে রেহাই পেতে সামরিক আইন জারি যথেষ্ট নয়, তখন ২৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭৫ মােশতাক নিরাপত্তা প্রতিবিধান অধ্যাদেশ ১৯৭৫ জারি করে। ১৯৭৯ সালে জেনারেল জিয়া এটি সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত করে। দুনিয়ার কোনাে সভ্যদেশের সংবিধানে খুনির এরকম পৃষ্ঠপােষকতা নজিরবিহীন। অধ্যাদেশটির মূল কথা নিম্নরূপমামলার রায়ের অংশবিশেষ, উদ্ধৃত ; ড. মােহাম্মদ হাননান, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের ইতিহাস, আগামীপ্রকাশনী, ঢাকা, ১৯৯৯, পৃষ্ঠা ২৩৬ ড. মােহাম্মদ হাননান, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচারের ইতিহাস,পূর্বোক্ত, পৃষ্ঠা ৬৩।  শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সেনাবাহিনী থেকে বরখাস্তকৃত মেজর ডালিম ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ ভােরে মুজিব ওঅন্যান্যদের হত্যা পর বেতারকেন্দ্র দখল করে ঘােষণা করেন : “আমি মেজর ডালিম বলছি, স্বৈরাচারী শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করা হইয়াছে; আর্মি ক্ষমতা দখল করিয়াছে।’ পরে রাষ্ট্রপতি মােশতাক ২০ আগস্ট আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক আইন জারি করেন।

সূত্র : বাংলাদেশের রাজনীতি ১৯৭২-১৯৭৫ – হালিমদাদ খান

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!