সাংবাদিক সভায়-
৯ই জুলাই সকাল ১০ টায় কেন্দ্রীয় শিল্পোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী জনাব মইনুল হক চৌধুরী সার্কিট হাউসে সাংবাদিক সম্মেলনে স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে দীর্ঘ আলােচনা করেন।
আলােচনা প্রথম থেকেই বাংলাদেশের সমস্যার উপর চলে। এ প্রসঙ্গে শীচৌধুরী তার বিদেশ সফরের অভিজ্ঞতা সাংবাদিকদের নিকট ব্যক্ত করেন। তিনি ইটালী, হাঙ্গেরী, অষ্ট্রিয়া, হল্যাণ্ড, সুইডেন প্রভৃতি দেশে বাংলাদেশ সম্পর্কে ভারত সরকারের বক্তব্য পেশ করে সেই সব দেশের সরকারের সহানুভূতি আকর্ষণ করিতে সক্ষম হইয়াছেন বলিয়া জানান। এই কয়েকটী দেশের সরকার বাংলাদেশের সমস্যা নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত পাকিস্তানকে আর সামরিক সাহায্য দিবেন না বলে জানা গিয়াছে। বাংলাদেশের বর্তমান। ঘটনাবলী আর পাকিস্তানের ঘরােয়া ব্যাপার বলে—ঐসব দেশের সরকার মনে করে না। শরণার্থী সমস্যার মােকাবেলায় সকল দেশই ভারতের ভূমিকার প্রশংসা করিয়াছে। সুইডেন এর মধ্যেই শরণার্থীদের জন্য ১০ কোটী টাকা সাহায্য মঞ্জুর করিয়াছে। আশা করা যায় অন্যান্য দেশের সরকার ও এ ব্যাপারে উপযুক্ত সাড়া দিবেন। শীচৌধুরী আফগানিস্থান ও ইরানেও সফর করেন এবং সেখানেও তার উদ্দেশ্য একেবারে ব্যর্থ হয়। নাই বলে তিনি জানান। ভারতের এবং বাংলাদেশের স্বার্থে প্রকাশ করা উচিত নয় বলে শীচৌধুরী সাংবাদিকদের কয়েকটী প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে যান এবং বিষয়ের গুরুত্ব উপলব্ধি করে সাংবাদিকরা এতে আর পীড়াপীড়ি করেন নাই। বাংলাদেশের ব্যাপারে কাছাড়ের সংখ্যালঘুদের নিষ্ক্রিয়তা ও অসহযােগিতার কথা জনৈক সাংবাদিক উত্থাপন করেন। এতে শ্রীচৌধুরী জানান যে তিনি নিজে কাছাড়ে, ভারতের অন্যান্য স্থানে এবং বিদেশে এ বিষয়ে পরিষ্কার ভাষায় তার মনােভাব ব্যক্ত করেছেন তথাপি কাছাড়ে যদি তার বিপরীত কিছু ঘটে থাকে তা, হলে সংখ্যালঘুদের এ বিষয় অবহিত হওয়া উচিত এবং যারা ভুল বুঝেন তাঁদের ভুল সংশােধনের চেষ্টা নেওয়া আবশ্যক। অতঃপর কাছাড়ে চিনির কল, কাগজের কল, বরাকডাম প্রভৃতি বিষয়ে আলােচনা হয়। শীচৌধুরী জানান, চিনির কল হওয়াটা নিশ্চিত। কেন্দ্রীয় সরকার আসামের জন্য একটী কাগজের কল মঞ্জুর করিয়াছেন, সেই কল কাছাড়ে না হই……… যাহাতে হােজাইতে হয় তজ্জন্য আসাম সরকার সিদ্ধান্ত করিয়াছিলেন। এই নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে কথাবার্তা চলিতেছে।
সূত্র: আজাদ, ১৪ জুলাই ১৯৭১