You dont have javascript enabled! Please enable it! 1971.07.28 | হােজাইতে জমিয়তে ওলামা সম্মেলন | আজাদ - সংগ্রামের নোটবুক

হােজাইতে জমিয়তে ওলামা সম্মেলন

দশ হাজারের অধিক লােকের যােগদান হােজাই – ২৩ শে জুলাই:- গতকল্য স্থানীয় আব্দুল হাসিব হাই স্কুলের সম্মুখস্থ প্রাঙ্গনে নির্মিত বিরাট মণ্ডপে দক্ষিণ পূর্ব নওগা জমিয়তে ওলামার বিশেষ সম্মেলন সফলতার সহিত অনুষ্ঠিত হইয়া গিয়াছে। কমপক্ষে দশ হাজার লােক অধিবেশনে যােগদান করেন।
বেলা ১১ টার সময় অধিবেশন আরম্ভ হয়। প্রাদেশিক জমিয়তে ওলামার সভাপতি আলহাজ্জ মৌলানা আহমদ আলী সাহেব সভাপতিত্বে বৃত হইয়াছিলেন।
বিশিষ্ট অতিথি হিসাবে আসামের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমহেন্দ্র মােহন চৌধুরী উদ্দীপনাময়ী ভাষণ প্রদান করেন। তিনি তাঁহার ভাষণে বাংলাদেশের মুক্তি সংগ্রামের কথা এবং তজ্জনিত উদ্ভূত পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করেন। শরণার্থীদের আগমনের পটভূমিকা এবং তাদের সাহায্য সহযােগীতার বিষয়েও তিনি ভারত সরকারের ও আসাম সরকারের দায়দায়ীত্বের কথা, বিশেষত আসামে শান্তি প্রীতি]তী অব্যাহত রাখার বিষয়ে বিশদভাবে বলেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন পাকিস্তান চাহিতেছে আমাদের মধ্যে গােলমাল বাঁধাইয়া তাহাদের অপকর্ম চাপা দিতে। কাজেই আমাদের সতর্ক থাকিতে হইবে।
মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর বক্তৃতা খুবই প্রনিণ]ধানযােগ্য হইয়াছিল।
আসামের কৃষিমন্ত্রী জনাব আতাউর রহমান তাহার ভাষণে বলেন জমিয়তে ওলামা ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে গৌরবময় কাজ করিয়াছে এবং এখনও ভারতে জাতীয় সংহতি এবং মিলন অটুট রাখার জন্য কাজ করিতেছে। পূর্ববাংলার ঘটনাবলির জন্য তিনি এহিয়া শাহীর নিন্দা করিয়া বলেন উহারা মুখে মুসলিম ও ইসলাম ইসলাম বলিতেছে কাৰ্য্যতঃ জঙ্গীশাহীরা ইসলামের বিরােধী কাজ করিয়া যাইতেছে।
আমাদের মধ্যে পাকিস্তানের কোন চর যাহাতে কোন আশ্রয় না পায় আর ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে আমরা যাহাদে মিলন অটুট রাখিয়া স্ব স্ব কাজ করিয়া যাইতে ও রীতিমত কৃষি, শিল্পে মনােযােগ দিয়া ভাল ফল পাইতে পারি তপ্রতি মনোেযােগী হইতে হবে। নির্বত্তক আইনে যাহাতে কোন নির্দোষ লােক না পড়েন বা। হয়রান না হন সে দিকেও লক্ষ্য রাখা উচিত।
প্রতিমন্ত্রী শ্রীসাধন রঞ্জন সরকার সংক্ষেপে বাংলাদেশের ঘটনাবলী এবং ভারত সরকারের ও আসাম সরকারের মানবীয় দায়ীত্বের কথা জোরালােভাবে বলেন। শত প্ররােচনা স্বত্তে[সত্বেও আমাদের সবাকার মিলন ও বন্ধুত্ব কখনও ক্ষুন্ন হইতে দেব না। শরণার্থীদের বিপন্ন অতিথির মত দেখা ও যথাসাধ্য সাহায্য করা উচিত। তাহারা আবার তাহাদের জন্মভূমিতে শীঘ্র ফিরিয়া যাওয়ার সুযােগের অপেক্ষায় আছেন।
সভায় নয়টি প্রস্তাব গৃহীত হয়। এই সম্মেলনের পর হইতে এই অঞ্চলে জনমতে নতুন ভাবের উদয় হইয়াছে।

সূত্র: আজাদ, ২৮ জুলাই ১৯৭১