-(গণির গ্রামের জনসভায়)-
বাংলাদেশকে সমর্থন করুন
কিভাবে পশ্চিম পাকিস্তানী খানগােষ্ঠী কর্তৃক পূৰ্ব্বপাকিস্তানের মানুষ বঞ্চিত, লাঞ্চিত ও উপেক্ষিত হইয়া আসিতেছে জনাব হক চৌধুরী তাহার এক তুলনামূলক ও তথ্যবহুল চিত্র অতি দৃঢ়কণ্ঠে জনসমক্ষে তুলিয়া ধরেন। স্বাধীনভাবে মানুষের মত বাঁচিয়া থাকার উদ্দেশ্যে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের লক্ষ লক্ষ মানুষ আজ যে সংগ্রাম চালাইয়া যাইতেছে তাহার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাইয়া এবং এহিয়া খানের এজিদী লীলা তথা নরহত্যা ও বর্বরতা এই পৃথিবীর ইতিহাসের অতি ঘৃণিত ও কলঙ্কিত কাজ বলিয়া তিনি মন্তব্য করেন নরনারী-ঘাতী পাষণ্ড এহিয়ার ইসলাম ও কোরাণের দোহাই একটি ভাওতা ছাড়া কিছু নহে। পাকিস্তান হইতে যাহারা প্রাণভয়ে ভারতে আসিতেছে জাতি ধর্ম নির্বিশেষে এই সকল মজলুমদের পূর্ণ সাহায্য ও সমর্থনের জন্য জনাব হক চৌধুরী দেশবাসীদেরে আবেদন জানান। তিনি আরও বলেন যে ভারত সরকার বাংলাদেশের সীমা উন্মুক্ত করিয়া দিয়াছেন এবং শরণার্থীদের যথােচিত সাহায্য দান করিতেছেন এবং করিবেন। মন্ত্রী মহােদয় সকলকে এই বলিয়া সতর্ক করিয়া দেন যে ঐ সকল শরণার্থীদের সহিত এহিয়া পন্থী গুপ্তচর ভারতে প্রবেশ করার সুযােগ পাইয়াছে এবং তাহারা এই দেশের জনগণকে বিভ্রান্ত করিতে ও পারস্পরিক সম্প্রীতি নষ্ট করিতে আপ্রাণ চেষ্টা করিবে, কাজেই তাহাদের সম্পর্কে সকলকে সজাগ থাকিতে হইবে। শ্রীহক চৌধুরী হইতে বাংলাদেশের সংগ্রামের ইতিবৃত্ত অবগত হইয়া ও তাহার উদাত্ত কণ্ঠের প্রেরণাময়ী বক্তৃতা শ্রবণ করিয়া উপস্থিত হাজার হাজার জনতা বাংলাদেশের আন্দোলনের প্রতি হাত তুলিয়া সমর্থন জানান।
অতঃপর সভার সভাপতি শ্রীপুর-কায়স্থ এক নাতিদীর্ঘ ভাষণ দান করেন। এতদঞ্চলের জনসাধারণের পক্ষে জনাব হুরমত আলী বড়লস্কর মন্ত্রী মহােদয়কে ধন্যবাদ জ্ঞাপনান্তে জাতীয় সঙ্গীত গীত হইলে পর বিপুল আনন্দ ধ্বনির মধ্যে সভার কাজ শেষ হয়।
সূত্র: আজাদ, ৫ মে ১৯৭১