মেঘালয়ে শরণার্থীদের দুরবস্থা
মেঘালয়ে বিশেষতঃ খাসিয়া পাহার [ড় জেলায় যে সমস্ত শরণার্থী আশ্রয় নিয়াছেন, তাঁহাদের দুর্গতি নিয়া বহু আলােচনা হইয়াছে, দিল্লী সংসদেও প্রসঙ্গটি উঠিয়াছে। ইদানীং কালে আরাে সহস্র সহস্র শরণার্থী প্রত্যহই মেঘালয়ে আসিয়া পৌছিতেছেন এবং তাহাদের অবর্ণনীয় দুর্গতির মধ্যে দিন যাপন করিতে হইতেছে। বলিয়া সংবাদ পাওয়া গিয়াছে। অভিযােগ পাওয়া গিয়াছে যে একদল স্থানীয় অধিবাসী গােড়া হইতেই এই শরণার্থীদের সম্পর্কে জনমনে অহেতুক আশংকা সৃষ্টিতে ব্যাপৃত হন, এবং বর্তমানে তাহারা মেঘালয়ের সরকারী-বেসরকারী উভয় স্তরেই পৰ্য্যাপ্ত প্রভাব বিস্তারে সক্ষম হইয়াছে। ফলে নবাগত এই সমস্ত শরণার্থীদের আশ্রয় এবং খাদ্য দানের ব্যাপারে পর্যাপ্ত গাফিলতি দেখানাে হইতেছে এবং বিনা চিকিৎসায় বহু লােক প্রত্যহ মারা যাইতেছে।
শরণার্থীদের ব্যাপারে যাবতীয় আর্থিক এবং অন্যান্য দায়-দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার গ্রহণ করিয়াছেন, কাজেই মেঘালয় সরকারের বর্তমান সহানুভূতিহীন মনােভাবের কোন সংগত যুক্তি নাই। সেই সঙ্গে ইহাও মনে রাখা প্রয়ােজন যে, ভারতের জনসাধারণ সামগ্রিকভাবে শরণার্থীদের আশ্রয় দানের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানাইয়াছেন। কাজেই এই ব্যাপারে কোনরূপ স্বেচ্ছাকৃত গাফিলতি প্রদর্শন জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী বলিয়া বিবেচিত হইবে। আশা করি মেঘালয় সরকারকে এই ব্যাপারে যথােচিত আন্তরিকতা প্রদর্শনের জন্য উদ্বুদ্ধ করিতে কেন্দ্রীয় সরকার আরাে কাৰ্য্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করিয়া এই বিপন্ন। মানব গােষ্ঠীর প্রতি স্বীয় কর্তব্য সম্পাদনে তৎপর হইবেন।
সূত্র: যুগশক্তি, ২২ অক্টোবর ১৯৭১