বাংলাদেশাগত শরণার্থী সম্পর্কে-
আসাম পঞ্চায়েত পরিষদের সভাপতির বিবৃতি
আসাম রাজ্য পঞ্চায়েত পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ শ্রীশরত চন্দ্র গােস্বামী আসামের পঞ্চায়েত অনুষ্ঠান সমূহে প্রেরিত পত্রে আসামের বিভিন্ন রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আসামের পঞ্চায়েতীরাজ অনুষ্ঠান সমূহেও পূর্ববঙ্গের নিরস্ত্র নিরপরাধী জনসাধারণের উপর পাকিস্তানী সামরিক প্রশাসনের বব্বর দমনমূলক উৎপীড়ন এবং নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে জনমত গড়িয়া তােলা ও সহানুভূতি প্রদর্শন করার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করেন।
শ্রীগােস্বামী আসামের মত সমস্যাবহুল রাজ্যের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সুস্থিরতা অটুট রাখিয়া ইহার প্রগতি…… করিতে পারে এমন কোন জঙ্গি পরিস্থিতি যাতে এই সমস্যার দ্বারা উদ্ভব হইতে না পারে তপ্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতী রাজ অনুষ্ঠান সমূহকে আবেদন জানান। তিনি আরও বলেন পূর্ববঙ্গে সংঘটিত দমনমূলক উৎপীড়ন ও ব্যাপক হত্যাকাণ্ডের ফলে শরণার্থী সমস্যা ভারতের অন্যান্য রাজ্য অপেক্ষা আসামে এক গুরুতর সমস্যা হিসাবে দেখা দিয়াছে। উল্লেখযােগ্য যে আসাম হইতে বহিষ্কৃত অবৈধ অনুপ্রবেশকারী শরণার্থীর বেশে পুনরায় আসামে অনুপ্রবেশ করিতে পারে, তাহা ছাড়া অন্তর্ঘাতী কার্যের উদ্দেশ্যে পাকিস্তানী সামরিক এজেন্ট ও আসামে অনুপ্রবেশ করিতে পারে। ইহা যদি হয় তবে আসামে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক পরিস্থিতি অতি গুরুতর ও ভয়াবহ হইয়া উঠিবে। আমাদের উদারতার সুযােগে ইতিমধ্যে আমাদের দেশকে বিপদাপন্ন ও দুর্বল করিতে নানা প্রকার শক্তি সক্রিয়ভাবে প্রচেষ্টা চালানাের ইঙ্গিত পাওয়া যাইতেছে। আমাদের এই রাজ্যের ঐক্য সংহতি দুৰ্বল করিতে পারে এমন কোন অবাঞ্ছিত পরিস্থিতির যাহাতে উদ্ভব হইতে না পারে এবং বিশেষভাবে সাম্প্রদায়িক অশান্তি হয় তৎপ্রতি সতর্ক দৃষ্টি রাখিতে তিনি আহ্বান জানান।
উল্লিখিত কোন রকমের চেষ্টা বা ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত পাইলে তৎক্ষণাৎ সংশ্লিষ্ট থানা, মহকুমাধিপতি, জিলাকৰ্ত্তাকে এবং রাজ্যিক পঞ্চায়েত পরিষদের কার্যালয়ে ও জানানাের জন্য পঞ্চায়েত সকলকে অনুরােধ জানান যাইতেছে।
সূত্র: আজাদ, ২৩ জুন ১৯৭১