বাংলাদেশাগত শরণার্থী সম্পর্কে
মুখ্যমন্ত্রী শীচৌধুরীর উক্তি
আসামের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমহেন্দ্র মােহন চৌধুরী গত ৫ই জুন তারিখে গৌহাটিতে এক বিবৃতি প্রসঙ্গে বলেন বাংলাদেশ হইতে আসাম ও মেঘালয়ে তিন লাখ ষাট হাজার শরণার্থী প্রবেশ করিয়াছে। তন্মধ্যে মেঘালয়ে প্রায় দুই লাখ দশ হাজার এবং আসামের কাছাড় ও গােয়ালপাড়ায় ১,৫০০০০ দেড় লাখ। কাছাড় ও গােয়ালপাড়ার শিবিরগুলিতে ৮৫ হাজার এবং আত্মীয় কুটুম্বের বাড়ীতে অবশিষ্ট ৬৫ হাজার শরণার্থী আশ্রয় নিয়াছে। করিমগঞ্জে ৫০ হাজার শরণার্থীর জন্য শিবির নির্মাণ করা হইবে। শিবির সমূহ কাছাড় ও গােয়ালপাড়ার সীমান্ত অঞ্চলে ৫ হাজার শরণার্থীর ইউনিট হিসাবে নির্মিত হইবে। কেন্দ্রীয় সরকার ফুড কর্পোরেশন মারফত কাছাড়, শিলং, তুরা, গৌহাটী ও গােয়ালপাড়াতে বৃহদাকার পাঁচটি গােদাম নির্মাণ করিয়া খাদ্য, দেশলাই এবং অন্যান্য প্রয়ােজনীয় দ্রব্য শরণার্থীগণকে সরবরাহ করিবেন। এ যাবত কেন্দ্রীয় সরকার শরণার্থী খাতে আসামকে ৬৫ লক্ষ টাকা দিয়াছেন আরও ৮৫ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করা হইয়াছে। কেন্দ্র হইতে আরও অর্থ পাওয়ার আশ্বাস রাজ্য সরকারকে দেওয়া হইয়াছে।
পাক সরকারের নির্যাতনে প্রত্যহ হাজার হাজার শরণার্থী আসাম মেঘালয়, ত্রিপুরা ও পশ্চিমবঙ্গে বাংলাদেশ হইতে প্রবেশ করিতেছে, বর্তমান হারে শরণার্থী আগমন চলিতে থাকিলে অচিরে এক কোটির অধিক লােক বাংলাদেশ ত্যাগ করিবে।
শ্রী চৌধুরী আরও বলেন যে বাংলাদেশ হইতে আগত শরণার্থীদের মধ্যে কিছু সংখ্যক গুপ্তচর, চোরাকারবারী সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধানােকারী মতলববাজ রহিয়াছে। ইতােমধ্যে গুপ্তচর সন্দেহে ১০০ জনকে গ্রেপ্তার করা হইয়াছে। উপসংহারে মুখ্যমন্ত্রী বলেন বাংলাদেশে যা ঘটছে ভারত ইহা পাকিস্তানের আভ্যন্তরীণ ব্যাপার বলিয়া মনে করেনা এবং কখনও এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে নীরব দর্শক হইয়া থাকিতে পারে না।
সূত্র: আজাদ, ২৩ জুন ১৯৭১