You dont have javascript enabled! Please enable it!

বালাট অঞ্চলে ৩৬ হাজার শরণার্থী

আগাম বিধান সভা উপাধ্যক্ষ শ্রীরথীন্দ্রনাথ সেন মেঘালয়স্থিত বালাট, মৌলিম প্রভৃতি শরণার্থী শিবির পরিদর্শনের পর গত ২৭শে তারিখ করিমগঞ্জে একটা কংগ্রেস সভায় যােগ দেন।
শ্রীসেন দৃষ্টিপাত সম্পাদককে বলেন, বালাট শিবির সম্পর্কে নানা প্রকার গুজব শােনার পর তিনি বিচলিত বােধ করেন এবং স্বচক্ষে অবস্থা পর্যবেক্ষণের জন্য তথায় উপস্থিত হন।
শিলং থেকে ৬৯ মাইল দূর্গম গিরিপথ দিয়ে তিনি বালাট শিবিরে উপস্থিত হলে হাজার হাজার শরণার্থী শ্রীসেনকে সম্বর্ধনা জানান। ২২ হাজার শরণার্থী এই শিবিরে আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। এক প্রকারের পাতার ছাউনি দেয়া শিবিরগুলাে অত্যন্ত মনােরম হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। তিনি ঘুরে ঘুরে শিবিরগুলি পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন বালাটের স্থানীয় অধিবাসী হচ্ছে মাত্র ৪ হাজার। সেই স্থলে এক সঙ্গে ২২ হাজার বা ততধিক লােক চলে আসায় প্রথমদিকে বিশেষ অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছিল। সেই সময় কলেরা রােগে প্রায় ২০০ লােকের প্রাণহানি ঘটে। তখন কিছুটা রাজনৈতিক কারণে এবং কিছুটা রােগ সংক্রমণের ভয়ে বালাটের অধিবাসীদের শিলং আসতে দেওয়া হয়নি। তখনই কিছুটা গুজব ছড়িয়ে পড়েছিল। তিনি শরণার্থীদের অসুবিধা সম্পর্কে খুটিয়ে খুটিয়ে জানতে চাইলে শরণার্থীরা তাকে জানান যে কিছুটা কাপড় চোপড় ও বাসনপত্রের অভাব তাদের আছে। অন্য কোন বিশেষ অসুবিধে তাদের নেই। শিবিরাধ্যক্ষ মি. ওয়ালং শ্রীসেনকে জানান যে বাসনপত্র আনানাের ব্যবস্থা হয়েছে এবং দু’চার দিনের মধ্যেই এই অসুবিধা দূর করে দেয়া হবে।
মাত্র ৭ মাইল দূরে অবস্থিত অন্য শিবিরটিও তিনি পরিদর্শন করেন।
সেখানেও ১৪ হাজার শরণার্থী আশ্রয় গ্রহণ করেছেন। যােগাযােগ বিহীন এই দূর্গম অঞ্চলে এত অধিক শরণার্থীকে আশ্রয়দান ও তাদের জন্য গৃহীত ব্যবস্থাদি শ্রীসেন সন্তোষ প্রকাশ করেন। শরণার্থীরা তাকে। একটি মানপত্র প্রদান করেন। তিনি শরণার্থীদের সমাবেশে এক ভাষণ দান করেন।
তিনি আরাে জানান যে কোন শরণার্থী সেইসব শিবির ছেড়ে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে যেতে ইচ্ছা প্রকাশ করলে তাদেরকে সে অনুমতি দেওয়া হচ্ছে। তবে যানবাহন ব্যবস্থা নিজেদেরকে করতে হবে।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ৩০ জুন ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!