You dont have javascript enabled! Please enable it!

শরণার্থী সমস্যা

আজ অবধি বাংলাদেশ থেকে প্রায় ৫০ লক্ষ শরণার্থী ভারতবর্ষের বিভিন্ন রাজ্যে আশ্রয় নিয়েছে। আমাদের করিমগঞ্জেই শরণার্থীর সংখ্যা লক্ষাধী[ধিীকে দাঁড়িয়েছে। মহকুমার সমস্ত স্কুল ও কলেজে শরণার্থীদের আপাততঃ আশ্রয় দেয়া হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী নীতিগতভাবে বাংলাদেশ থেকে যত লােক আসতে চায় সবাইকেই আশ্রয় দেওয়া হবে বলে ঘােষণা করেছেন। আবার অবস্থা অনুকূল হলেই সবাইকে সেখানে ফিরে যেতে হবে বলেও ঘােষণা করেছেন। কিন্তু আপাতত ভারত সরকার ৬ মাসের জন্য এ ব্যাপক শরণার্থী সমস্যা সমাধানের বিধিবদ্ধ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।
আমরা এ ব্যাপক ও বহুল শরণার্থী সমস্যাকে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদী দুই দিক থেকেই বিচার করে দেখা প্রয়ােজন বলে মনে করি।
স্বল্প স্থায়ী ব্যবস্থা হিসাবে অচিরেই সকল শরণার্থীকে নব নির্মিত ক্যাম্প সমূহে স্থানান্তরিত করা প্রয়ােজন। কারণ গ্রীষ্মের ছুটি শেষ প্রায়। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি সময় মত খুলতে না পারলে ছাত্রদের বিরাট ক্ষতি হবে, প্রত্যেকটা শহরের জনস্বাস্থ্য বিপর্যস্ত হবে এবং সর্বোপরি দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিকেও রােধ করা যাবে না। শরণার্থী শিবির তৈরি করতে কর্তৃপক্ষের দেড় মাসের পর আর সময় নেওয়া প্রশাসনিক দূর্বলতা বলে প্রতিভাত হবে।
ভারতের গৃহীত নীতি অনুযায়ী এখন শরণার্থী শিবির সমূহ সীমান্ত ছাড়াও অভ্যন্তরে স্থাপিত হচ্ছে। ছয় মাসের অধিক এক জায়গায় বসবাসকারী শরণার্থীর বৃহদাংশ জনজীবনে মিশে ছড়িয়ে পড়বে তা অস্বীকার করার উপায় আছে কি?
শরণার্থীদের বেশে পাক গুপ্তচর ভারতে এসে অন্তর্ঘাতি কাজে লিপ্ত হওয়ার খবর আসছে। প্রশাসনিক তৎপরতা ও ব্যবস্থার সমন্বয় সাধন এখনাে প্রয়ােজন এ না হলে সরকারকে ভবিষ্যতে খেসারত দিতে হবে।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ১৯ মে ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!