You dont have javascript enabled! Please enable it!

পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর বর্বরতা
হাজার হাজার শরণার্থীর করিমগঞ্জ মহকুমায় আগমন

শ্রীহট্ট জেলায় পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী নিজেদের শক্তি বৃদ্ধি করিয়া শ্রীহট্ট সহর বিধ্বস্ত করিয়াছে এবং গ্রামাঞ্চলের দিকে হানা দিতে সুরু করিয়াছে। লুঠতরাজ, গৃহদাহ, নারী ধর্ষণ, গােলাগুলি বর্ষণ করিয়া নরহত্যা তাহারা বেপরােয়াভাবে চালাইয়াছে। তাহার ফলে শরণার্থী আগমনের হারও গত কয় দিনে প্রায় অকল্পনীয় পর্যায়ে গিয়া পৌঁছিয়াছে। বেসরকারী মহলের ধারণা এখন পর্যন্ত অন্তত ৪০ সহস্র শরণার্থী এই মহকুমায় প্রবেশ করিয়াছেন। তাহাদের মধ্যে ১২ হাজারকে ২৩টি ক্যাম্পে স্থান দেওয়া হইয়াছে। সহর এবং মফঃস্বলের প্রায় সবগুলি হাইস্কুল গৃহই শরণার্থী শিবিরের জন্য সরকার নিয়াছেন। এই ধরণের জনস্রোতে অব্যাহত থাকিলে স্থান সংকুলান করা রীতিমত সমস্যা হইবে বলিয়া কর্তৃপক্ষ মনে করিতেছেন।
মহকুমা প্রশাসন প্রচেষ্টা সত্ত্বেও এই ব্যাপক সমস্যার মােকাবিলা করিতে হিমসিম খাইতেছে। সীমান্তবর্তী ক্ষুদ্র গ্রামগুলিতে সহস্র শরণার্থী জমায়েত হইলে তাহাদের সামরিক আশ্রয় দানও একটা সমস্যা হইয়া দাঁড়াইয়াছে। ইহাদের দ্রুত স্থানান্তরের জন্য যে পরিমাণ যান বাহন দরকার, তাহাও সংগ্রহ করা সম্ভব হইতেছে না। বাস এসােসিয়েশন তাহাদের রুট সার্ভিস বাতিল করিয়াও বাস দিয়া সাহায্য করিতেছেন, কিন্তু প্রয়ােজনের মােকাবিলা করা তাহাদেরও সাধ্যাতীত। এই ব্যাপক শরণার্থী সমাগম মহকুমার জনস্বাস্থ্যকে যাহাতে বিঘ্নিত করিতে না পারে, তজ্জন্য ব্যাপক ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়ােজন। রেডক্রসের পক্ষ হইতে বিভিন্ন কেন্দ্র ফার্স্ট এড এবং ভ্রাম্যমান চিকিৎসার ব্যবস্থা হইয়াছে, কিন্তু তাহাদের ক্ষমতা একান্ত সীমিত। সিভিল হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্সটি প্রায়শঃই অকেজো থাকে। পৌর স্বাস্থ্য বিভাগ এবং সরকারী জনস্বাস্থ্য বিভাগকে আরাে শক্তিশালী করা প্রয়ােজন।

সূত্র: যুগশক্তি, ৩০ এপ্রিল ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!