শােচনীয় ঘটনা
কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী শ্রী জগজীবনরাম করিমগঞ্জ সীমান্ত ভ্রমণ করিয়া যাওয়ার ঠিক পরেই সুতারকান্দি সীমান্তে পাকবাহিনীর বর্বর হামলার মােকাবিলায় আমাদের সীমান্ত রক্ষা ব্যবস্থার যে শােচনীয়তা প্রকট হইয়াছে, তাহা যে কোন স্বার্বভৌম রাষ্ট্রের পক্ষেই লজ্জাকর।
পাকিস্তানী হামলাকারীরা যে অকস্মাৎ এই হামলা করিয়াছে, তাহা নয়, কারণ গােটা সীমান্ত জুড়িয়া বেশ কিছু দিন ধরিয়াই প্রকাশ্যে তাহারা যুদ্ধ প্রস্তুতি চালাইয়াছে এবং কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষামন্ত্রী স্বয়ং তাহা স্বচক্ষে দেখিয়া গিয়াছেন। তৎসত্ত্বেও আক্রমণের মুখে আমাদের প্রাথমিক প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার এতটা বিপৰ্যয় হইল কেন সেই কৈফিয়ত উপদ্রুত এবং ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার অধিবাসীরা নিশ্চয়ই সরকারের নিকট দাবী করিতে পারেন। আমাদের রাষ্ট্রনীতির নিয়ামকগণ পাকিস্তানীদের শুভবুদ্ধির উপর এক ধরণের নির্বোধ আস্থা স্থাপন করিয়া থাকেন এবং বহুবার ঠেকিয়াও তাহারা কোনরূপ বাস্তব শিক্ষা গ্রহণে অপারগ হন। বস্তুতঃ এই ধরণের বজ্জাতি প্রতিরােধের জন্য শুধুমাত্র প্রতিবাদ পত্রের উপর নির্ভর না করিয়া দ্রুত সক্রিয় প্রতিশােধমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ব্যবস্থা হইলে তবেই পাকিস্তানী জঙ্গী কর্তাদের বিষদাঁত ভাঙিবে এবং পৌনঃপুনিক এই ধরণের ঘটনার স্থায়ী প্রতিকারের জন্য ভারত সরকারকে সেই পথেই অগ্রসর হইতে হবে।
এই হামলায় যাঁহারা নিহত হইয়াছেন, তাঁহাদের আত্মীয় পরিজনদের এবং আহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি আমরা আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করিতেছি এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে পৰ্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ দানের জন্য অনুরােধ জানাইতেছি।
সূত্র: যুগশক্তি, ২৮ মে, ১৯৭১