আগরতলা ও আসাম সীমান্তে পাকিস্তানী আক্রমণ
গত ২৪ শে অক্টোবর সন্ধ্যায় পাকিস্তানী সৈন্যরা আগরতলা শহরের উপর প্রচণ্ড গােলাবর্ষণ করে। ফলে ৪ জনের মৃত্যু ঘটে ও ২০ জন আহত হয়।
ত্রিপুরার প্রাক্তন মন্ত্রী শ্ৰীতড়িৎ দাশগুপ্তের বাড়িতে মর্টারের গুলি পড়ে বাড়ীর ছাদ ভেঙ্গে যায়। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে আগরতলা থেকে ৮ মাইল দূরবর্তী আখাউড়া ও ফকিরমুরা থেকে পাকসেনারা দূর পাল্লার কামানে গােলাবর্ষণ করতে থাকে। শহরের কেন্দ্রস্থল মসজিদ রােড, জেল রােড ও বনমালীপুরে প্রায় ১২ টা মর্টারের গােলা পড়ে।
এ ছাড়াও বিমানঘাটীর নিকটস্থ লঙ্কমুড়া গ্রামেও এই গােলা বর্ষিত হয়।
এই গােলাবর্ষণের ফলে আগরতলা শহরে একটী আড়াই বছরের শিশু ও তার মা পূর্ণলক্ষ্মী দেববর্মা ও শ্রীসন্তোষ মুখার্জি বিমলা নামক ৪ ব্যক্তির মৃত্যু ঘটে। এছাড়াও প্রায় ২০ জন ব্যক্তি আহত হয়। এই গােলা বর্ষণের ফলে কয়েক ঘণ্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ থাকে।
উপরােক্ত ঘটনার দুই তিন দিন পূর্ব থেকেই পাক গােলন্দাজ বাহিনী ত্রিপুরা রাজ্যের কমলপুর শহরে প্রচণ্ড গােলাবর্ষণ করে। ইহার ফলে ১১ জন ভারতীয় নাগরীকের মৃত্যু ঘটে। কতিপয় সরকারী কর্মচারী ব্যতীত জনসাধারণের বৃহদাংশ নিরাপদ আশ্রয়ের সন্ধানে গ্রামাঞ্চলে চলে যাচ্ছেন।
করিমগঞ্জ মহকুমার পুতনী চা বাগানের উপর পাকিস্তানী প্রচণ্ড গােলাবর্ষণের ফলে ৫ টা ভারতীয় শিশু গুরুতর আহত হয় এবং শ্রমিক লাইনের এক শতাধিক পরিবার তাদের আবাসস্থল ছেড়ে বাগানের নাচঘরে আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ত্রিপুরা ও আসাম সীমান্তে নাগরিক প্রতিরক্ষার সর্ব প্রকারের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হচ্ছে।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২৭ অক্টোবর ১৯৭১