পাকবাহিনীর ভারতীয় এলাকায় আক্রমণ
৫ দিন ব্যাপী সুতারকান্দী লাতু সীমান্তে মুক্তিবাহিনী ও পাকফৌজের মধ্যে তুমুল লড়াই | করিমগঞ্জ সীমান্তবর্তী এলাকা লাতু ও সুতারকান্দি সীমান্তে পাকসেনাদল ও মুক্তিবাহিনীর মধ্যে গত ২০শে মে থেকে ৫ দিন ব্যাপী এক সুদীর্ঘ লড়াই চলে। মুষ্টিমেয় মুক্তিযােদ্ধা প্রবল বিক্রমে দুই হাজার পাক সেনাকে ঠেকিয়ে রাখতে সক্ষম হয়। এই লড়াইয়ে দুই শতাধিক পাকসৈন্য নিহত হয় বলে প্রকাশ।
২৪ মে সকাল ৫ ঘটিকায় বিপুল সংখ্যক পাক সৈন্য বাংলাদেশস্থ সুতারকান্দি চেকপােস্টটী আক্রমণ করে। মুক্তিসেনারা প্রচণ্ড বিক্রমে বাধা সৃষ্টি করে। পাক সেনারা অগ্রসর হতে থাকলে মুক্তিযােদ্ধারা ৫০ জনের ও অধিক পাক সেনাকে নিহত করে। সকাল প্রায় ১০ ঘটিকায় পাকসেনারা বিক্ষিপ্তভাবে মাঠ দিয়া অগ্রসর হয় এবং ভারত রাষ্ট্রে প্রায় মাইল খানেক আগাইয়া আসে ও ভারত রাষ্ট্রের সুতারকান্দি বর্ডার সিকিউরিটি পােস্টটী দখল করে। পাকসেনারা ভারত রাষ্ট্রের জাড়াপাতা ও খালেরপার গ্রামের উপর প্রচণ্ডভাবে মর্টারের গুলি ছুড়িতে থাকে। | পাক সেনাদের গুলিবর্ষণের ফলে জাড়াপাতা গ্রামের রমনী মােহন দাস, সৌদামিনি চন্দ ও দুলাল নমঃশূদ্র সংগে সংগেই নিহত হয়। এবং আরাে কয়েকজন আহত হয়। এ ছাড়া নগেন্দ্র দাস অনাথ দাস, মণীন্দ্র দাস এবং অন্য আর একজনকে ভারতীয় এলাকা থেকে পাকসেনারা বলপূর্বক ধরে নিয়ে যায়। কয়েকটী মেয়ের উপর অমানুষিক পাশবিক অত্যাচার করার সংবাদও পাওয়া গেছে।
সীমান্ত থেকে ভারতীয় এলাকায় প্রায় ১ কিলােমিটার ভেতরে সুতারকান্দি লক্ষ্মীবাজার রাস্তায় পাক সেনারা চলে আসে এবং অবিশ্রান্ত কামান থেকে গােলাবর্ষণ করতে থাকে। ফলে সুতারকান্দি চেকপােস্টে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্সের দুইজন নিহত হয় এবং অন্য কয়েকজন ও আহত হয়। ভারতীয় দিক থেকেও উহার প্রত্যুত্তর দেয়া হয়। ২৫ জন পাকসেনা ভারতীয় এলাকায় নিহত হয়। প্রায় ১২ ঘণ্টা তুমুল লড়াইয়ের পর পাক সেনারা ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২৬ মে ১৯৭১