You dont have javascript enabled! Please enable it!

বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় মুক্তিবাহিনীর অপ্রতিহত গতি
গােয়াইনঘাট ও কানাইঘাট থানা পাক কবলমুক্ত

জকিগঞ্জ এলাকা মুক্ত করার পর জঙ্গী সরকার মুক্তিফৌজকে প্রতিহত করার উদ্দেশ্যে করিমগঞ্জ শহর থেকে প্রায় ২৮ কিলােমিটার দূরে চুড়খাই এর সন্নিকটবর্তী স্থানে ৮ পাঞ্জাব রেজিমেন্টের বিপুল সংখ্যক সৈন্য সমাবেশ করেছে। চুড়খাই এর নিকট টিকরপাড়ায়ও সাঁজোয়া ট্যাংক বাহিনী নিয়ে পাকসৈন্যরা একটী প্রতিরক্ষা ঘাঁটি তৈরি করেছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে। সেইস্থান থেকে ভারতীয় সীমান্ত গ্রামগুলির উপর অবিরত দূর পাল্লার কামান লাগিয়ে তারা একটা ত্রাসের সৃষ্টি করতে চেষ্টা নিচ্ছে। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীববাহিনীও তাদের জবাব দিতে কসুর করছে না।
মুক্তিফৌজের চুড়খাইতে পাকসমাবেশ থেকে প্রায় ৪ মাইল দূরে তাদের প্রতিরক্ষা ব্যুহ তৈরি করে পাক হামলার প্রতিক্ষায় বসে আছে এবং অন্যদিকে নতুন নতুন ফ্রন্টে মুক্তিফৌজরা আক্রমণ সুরু করেছে। জকিগঞ্জ চুড়খাই রাস্তা থেকে একদল মুক্তিসেনা কানাই ঘাট চলে যায় এবং কানাইঘাট থানা এলাকাকে মুক্ত করতে সক্ষম হয়।
অন্যদিক থেকে আর একটি দল গােয়াইনঘাট ও রাধানগরে পাকফৌজের ঘাঁটিটি ধ্বংস করে দেয়। বর্তমানে মুক্তিসেনারা চুড়খাইকে পেছনে রেখে তিনদিক থেকে সিলেটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে।
লাতুতে পাকফৌজরা ভারতীয় গ্রামের উপর বিনা প্ররােচনায় মেশিনগান থেকে গুলি চালাতে সুরু করলে ভারতীয় সীমান্ত বাহিনী উপযুক্ত জবাব দিয়ে তাদেরতে স্তব্ধ করে দেয়।
বড়লেখাতে পাকঘাঁটির উপর মুক্তিবাহিনী হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। সােনারূপা ও অন্য কয়েকটি চাবাগান বর্তমানে মুক্তিফৌজের সম্পূর্ণ দখলে।
আসাম ত্রিপুরা সীমান্ত বরাবর গড়ে ২০ কিলােমিটার বিস্তৃত সুদীর্ঘ অঞ্চল থেকে পাকবাহিনী পশ্চাদপসরণ করতে বাধ্য হয়েছে। চারদিক থেকে আক্রান্ত হওয়ার ফলে পাকবাহিনী এক একটা বিশেষ স্থানে জমা হয়ে প্রতিরক্ষা ঘাঁটি গড়ে তােলার চেষ্টা করছে।
রাজাকাররা অস্ত্রশস্ত্র সহ দলে দলে আত্মসমর্পণ করতে সুরু করেছে বলে প্রত্যেহই সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ১ ডিসেম্বর ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!