সিলেট অঞ্চলে মুক্তিবাহিনীর বিরাট সাফল্য
বহু পাকসৈন্য নিহত ও বহু গুপ্তচর গ্রেপ্তার
গত পক্ষকাল মধ্যে মুক্তিবাহিনী সিলেট অঞ্চলে পাক-বাহিনীর উপর আক্রমণ চালিয়ে বিরাট সাফল্য অর্জন করেছে। | ২৬শে ও ২৭ আগষ্ট ছােটলেখাতে মুক্তিবাহিনী পাকফৌজের উপর হামলা চালায়। মুক্তিবাহিনীর একটি মাইনের আঘাতে একটি ট্রাক সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত হয় এবং ঘটনাস্থলেই ১০ জন পাক সেনা নিহত ও ২ জন আহত হয় বলে সংবাদ পাওয়া গেছে।
২৮শে তারিখ কেরামতনগরে মুক্তিবাহিনীর একটী মাইন বিস্ফোরণের ফলে একটী জীপগাড়ী ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় ও একজন অফিসার সহ ৫ জন পাকসেনা নিহত হয়। ২৯শে তারিখ বড়লেখার সন্নিকটবর্তী গােয়ালবাড়ীতে প্রায় ৭০ জন পাকসেনা টহলরত মুক্তিবাহিনীর একটী দলকে অতর্কিত আক্রমণ করে বসে। প্রত্যুৎপন্নমতিতার ফলে মুক্তিসেনারা একজন অফিসার সহ ২ জন পাকসেনাকে খতম করে ঘাটীতে ফিরে আসতে সক্ষম হয়। ৩০ তারিখ সােনারূপাতেও অনুরূপ পাক সেনার একজন সুবেদার সহ ২ জন নিহত হয়। ৩১শে তারিখ ছােটলেখাতে মুক্তিবাহিনী ২ জন রাজাকরকে খতম করে দেয় এবং ২ জন গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
৪ঠা সেপ্টেম্বর কুকিলের সন্নিকটে মুক্তিবাহিনী একজন মহিলা পাক গুপ্তচরকে গ্রেপ্তার করে। ঐদিন মুক্তিবাহিনী অন্যদিকে পাকঘাটী আটগ্রাম ডাকবাংলােটী আক্রমণ করে। উভয়পক্ষে প্রায় ১৩ ঘণ্টা তুমুল লড়াই হয়। এই লড়াইয়ে পাকবাহিনীর ১৬ জন পাঞ্জাবী সেনা ও ১০ জন রাজাকর (রাজাকার) নিহত হয় বরে দাবী করা হয়। মুক্তিফৌজের গ[গেরিলা বাহিনীর ২ জন আহত হয় বলেও প্রকাশ।
৫ই সেপ্টেম্বর জুরি-গােয়ালবাড়ী পূর্তবিভাগীয় রাস্তাটীতে মুক্তিসেনারা জামকান্দি নামক স্থানে একটী ৩৫ ফুট দৈর্ঘ্য সেতু সম্পূর্ণ ধ্বংস করে দিয়ে যানবাহন চলাচলে অসুবিধা সৃষ্টি করে। ঐখানেই মুক্তিসেনারা ৪০০ গজ টেলিফোন তার কেটে নিয়ে আসে। ঐদিনই ভাঙ্গাতে উভয়পক্ষে তুমুল লড়াই হয় এবং ৬ জন পাকসেনা নিহত হয়।
৬ই সেপ্টেম্বর দিলখুস বাগানে মুক্তিসেনাদের এক কামাণ্ডো দল ১ জন দালাল সহ ৭ জন পাঞ্জাবী সৈন্যকে খতম করে দিতে সক্ষম হয়। ঘটনাস্থল থেকে ২ জন পাক চরকেও তারা গ্রেপ্তার করে নিয়ে আসে।
একই দিনে পাক-বাহিনী সারপার মুক্তিফৌজের ঘাটিটী আক্রমণ করে এবং ৮ ঘণ্টা তুমুল লড়াইয়ের পর পিছু হটে যেতে বাধ্য হয়।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ৮ সেপ্টেম্বর ১৯৭১