বাংলাদেশের দিকে দিকে মুক্তিফৌজের সফলতা
হানাদার খান সােনারা একে একে নাজেহাল বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থানের সংবাদে প্রকাশ, বর্ষা ঘনাইয়া আসায় মরণপাগল মুক্তিসেনারা বাংলাদেশের সকল জিলাতেই খানসেনাদের কঠোরভাবে নাজেহাল করিতেছে।
সিলেটের সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ ও হবিগঞ্জ মহকুমা মুক্তিফৌজের দখলে; গােয়াইনঘাট ও কানাইঘাট থানা এলাকায় অধিকাংশ স্থানে মুক্তিবাহিনী জাকিয়া বসিয়াছে।
ইতিমধ্যে মুক্তিবাহিনী পাঠান সেনাদের দখল হইতে বহু বন্দুক মেশিনগান, ভারি অস্ত্র ও গােলাবারুদ দখল করিয়া লইয়াছে। আখাউড়া, কুমিল্লা, নােয়াখালী এই সকল বহু স্থানে যুদ্ধ করিয়া বাংলাদেশের গেরিলা দল পাঠানদেরে হঠাইয়া দিয়াছে।
সাবেক ই পি আর (ইষ্ট পাকিস্তান রাইফেল ফোর্স), পুলিশ দল, বেঙ্গল রেজিমেন্ট ও মুক্তিবাহিনী একযােগে পরিকল্পনার সহিত খান সেনাদের উপর দারুণ আক্রমণ চালাইয়া আগাইতেছে। নদী, নালা, বিল হাওর গুলিতে জল হওয়ায় পাঠান সেনারা বেকার হইয়া পড়িয়াছে। কুলউড়া, লাতু ও মৌলভিবাজার অঞ্চলে পাঠান সেনারা পিছু হটিতেছে।।
পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে এবং ময়মনসিংহ জেলায় বাংলাদেশের গরিলাদল খানসেনাদের বহু স্থানে হটাইয়া দিয়া বিস্তর সমরাস্ত্র দখল করিয়াছে।
মুক্তাঞ্চল সমূহে সামরিক ট্রেনিং লাভ করার পর প্রায় ৪০ হাজার গেরিলা সৈন্য বিভিন্ন অঞ্চলে পাঠানদের উপর ঝাপাইয়া পড়িতেছে বলে জানা যায়।
মুক্তিফৌজের কর্ণেল আবদুর রব কর্ণেল দত্ত, বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গেরিলা দলকে যথারিতী যেথারীতি] পরিচালনার ব্যবস্থায় সফলতা লাভ করিতেছেন। গেরিলারা অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলে স্থানীয় লােকদের নিকট হইতে নানাভাবে সাহায্য পাইতেছেন।
-খানেরা দেশে ফিরিতে চাহিতেছে-
খান সেনারা পশ্চিম পাকিস্তানে ফিরিয়া যাওয়ার জন্য চেষ্টা করিতেছে। বেলুচ সেনারা আর নিরস্ত্র গ্রামবাসীদের উপর আক্রমণ চালাইতে চাহিতেছেনা। পাক হানাদার সেনাদলের মধ্যে কোন্দল আরম্ভ হইয়া গিয়াছে। কোথাও খান সেনারা তাহাদের নির্দিষ্ট ছাউনির বাহির হইতে সাহসী হইতেছে না। পাঠান সিপাহীরা স্থানে স্থানে মার খাইতে খাইতে মনােবল হারাইয়া ফেলিতেছে।
সূত্র: আজাদ, ১৬ সেপ্টেম্বর ১৯৭১