You dont have javascript enabled! Please enable it!

সিলেটের সান্তোপার খড়মপুর রণাঙ্গনে মুক্তিবাহিনী ও খানসেনাদের প্রচণ্ড যুদ্ধ
ছয় ঘণ্টায় সাড়ে তিনশত শত্রুসৈন্য খতম

গত ১৭ই সেপ্টেম্বর সিলেট জেলার সারােপার খড়মপুর রণাঙ্গনে বাংলাদেশ মুক্তিবাহিনীর সাথে হানাদার পাক সেনাদের ছয় ঘণ্টা ব্যাপী এর তুমুল যুদ্ধে শত্রুবাহিনীর সাড়ে তিনশত সৈন্য নিহত হয়েছে। এই যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী চার শতাধিক মুক্তিযােদ্ধা অভূতপূর্ব বীরত্ব প্রদর্শন করেন। একজন মুক্তিসেনা এই যুদ্ধে শাহাদত বরণ করেছেন এবং ৬ জন আহত হয়েছেন। খানসেনা ও রাজাকার বাহিনীর অগনিণেতি জোয়ান এই যুদ্ধে মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে। সৈন্যদের মৃতদেহ অপসারণের জন্য খান বাহিনী হেলিকাপ্টার নিয়ােগ করে। প্রায় ২ ব্যাটেলিয়ন পাক সৈন্য এই যুদ্ধে মুক্তিবাহিনীকে ঘেরাও করে ফেলার চেষ্টা করলে তারা উল্টো মুক্তিবাহিনীর অকুতােভয় যুবকদের অব্যর্থ লক্ষ্যে নাস্তাবুদ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ে। পরাজিত খানসেনারা মুক্তিসেনাদের কিছু করতে না পেরে সীমান্তের সারােপার, টেকইকোনা, খড়মপুর ইত্যাদি গ্রামের নিরস্ত্র জনতার উপর গুলিবর্ষণ করে তিন শতাধিক লােককে হত্যা করে। ফলে, সংশ্লিষ্ট এলাকাসমূহ থেকে বিপুল সংখ্যক শরণার্থী বাধ্য হয়ে ভারতে চলে এসেছেন। সারােপার গ্রামের নিকটবর্তী একটি মসজীদ থেকে ভােরবেলা নামাজীরা বেরিয়ে এলে কশাই পাঞ্জাবী সৈন্যরা তাদের উপরও নির্বিচার গুলিবর্ষণ করে। এই যুদ্ধে পাকবাহিনী বিভিন্ন ধরণের মারাত্মক ও ভারী ধরণের অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করে। কয়েকটি মর্টার শেল ভারতীয় এলাকায়ও এসে থাকে।
উল্লেখযােগ্য, …… পাকবাহিনী অধিকৃত এলাকায় জনসাধারণ ও সশস্ত্র রাজাকারদের দিয়ে জয় বাংলা ধ্বনি সহকারে মুক্তিবাহিনীর ছদ্মবেশে মুক্তাঞ্চলে আক্রমণের প্রস্তুতি চালায়। জয়বাংলা শ্লোগান দানকারীদের একজনের কণ্ঠ থেকে দৈবাৎ পাকিস্তান জিন্দাবাদ শ্লোগান বেরিয়ে পড়লে মুক্তিযােদ্ধারা সঙ্গে সঙ্গে প্রতিরােধ ও আক্রমণ শুরু করেন। ক্ষিপ্র ও তাৎক্ষণিক আক্রমণের ফলেই খানসেনাদের প্রভূত ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়।

সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২২ সেপ্টেম্বর ১৯৭১

error: Alert: Due to Copyright Issues the Content is protected !!