সিলেট অঞ্চলে সাহাবাজপুর পাক ঘাটি সম্পূর্ণ বিদ্ধস্ত
মুক্তিফৌজ ও পাকবাহিনীর মধ্যে আট ঘণ্টাব্যাপী তীব্র লড়াই
৫০ জন পাক সৈন্য নিহত ৬৫ জন গুরুতর আহত একজন ভারতীয় নাগরিকের মৃত্যু মুক্তিফৌজ সহ কয়েকজন নাগরীক জখম মুক্তিফৌজ কর্তৃক বহু অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধার
করিমগঞ্জ মহকুমার লাতু সীমান্তে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে সাহবাজপুরে পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী একটি শক্ত ঘাঁটি তৈরি করে অনবরত ভারত সীমান্ত আক্রমণ করে চলেছে।
বিগত ৯ আগস্ট উক্ত ঘাটিতে অবস্থিত এক প্লেটুন পাকসৈন্য ও ১৪০ জন রাজাকার ভারতীয় লাতু সীমান্তে তীব্র আক্রমণ করে বসে। মুক্তিসেনারা প্রচণ্ডভাবে এই আক্রমণে বাধা সৃষ্টি করে ও পাল্টা আক্রমণের ফলে সাহাবাজপুর পাক ঘাঁটিটি সম্পূর্ণ বিদ্ধস্ত করে দেয়। আট ঘণ্টাব্যাপী উভয়পক্ষে প্রচণ্ড লড়াই হয়।
পাকবাহিনী প্রথমে দূরপাল্লার মর্টার চালিয়ে আক্রমণ চালায়। ভারতীয় সীমান্তের প্রায় ৪ কিলােমিটার অভ্যন্তরে এই সকল গােলা এসে পড়তে থাকে। সীমান্ত থেকে প্রায় ২ কিলােমিটার অভ্যন্তরে লাতুর ঘােডাজিন গ্রামে এক বাড়ীতে মর্টার শেল পড়ায় ……. দেবী নামক এক ৫৫ বৎসরের প্রৌড়াঢ়িার ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়। একই বাড়ীতে শ্রীললিত চক্রবর্তী, শ্রীবিজন চক্রবর্তী, শ্রীমতী….. দেবী ও শ্ৰীমতী চারু চক্রবর্তী গুরুতরভাবে জখম হন।
মুক্তিফৌজের তরফ থেকে এই আক্রমণে প্রচণ্ডভাবে বাধা সৃষ্টি করা হয় এবং আট ঘণ্টাব্যাপী প্রচণ্ডভাবে ও গরিলা পদ্ধতিতে পাল্টা আক্রমণ চালায়। আক্রমণের তীব্রতায় সাহাবাজপুর পাক ঘাটি সম্পূর্ণভাবে বিদ্ধস্ত হয়ে যায়। ৫০ জন পাক সৈন্য নিহত ও ৬৫ জন গুরুতরভাবে আহত হয় বলে মুক্তিফৌজ দাবী করে মুক্তিফৌজের পক্ষেও ৭ জন গুরুতরভাবে আহত হয়। বর্তমানে তাহারা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
ঘাঁটিটি বিদ্ধস্ত হওয়ার ফলে জীবিত পাকসৈন্যরা ইতঃস্তত বিক্ষিপ্ত হয়ে যায় কিন্তু বড়লেখার দিক থেকে বহু সংখ্যক পাক সৈন্য তাদের সাহায্যে এগিয়ে আসেন ঐ সময় একটি জলা যায়গায় প্রায় ৩০ জন মুক্তিফৌজকে পাকসেনারা ঘেরাও করে ফেলে। কিন্তু প্রত্যুৎপন্নমতিতার ফলে তাহারা কোন প্র অবস্থায় ফিরিয়া আসিতে সক্ষম হয়। ভারতীয় সীমান্তের গ্রামগুলিতে গােলাবর্ষণের ফলে অধিবাসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ১১ আগস্ট ১৯৭১