মুক্তিফৌজের আক্রমণে পাকসেনাদল নাজেহাল
গত ২৬শে জুলাই মুক্তিফৌজের অতকিত [অতর্কিত আক্রমণে শ্রীহট্ট জেলার সাবাজপুর (লাতু) রেলওয়ে ষ্টেশনে অবস্থিত পাক সেনাবাহিনীর দল হত, আহত ও ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হইয়া গিয়াছে। মুক্তিবাহিনীর বিরামহীন গুলিবর্ষণে ৪২ জন পাক-সেনা মারা যায়। বহু সৈন্য গুরুতরভাবে আহত হয়। মুক্তিফৌজের দাপটে টিকতে
পেরে গােলাগুলি অস্ত্রশস্ত্র ব্যাঙ্কার সব ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের আশায় দৌড়াইয়া অবশিষ্ট পাক-সেনাগণ প্রাণের মায়ায় পলাইয়া যাইতে বাধ্য হয়।
মুক্তিবাহিনী তাহাদের ব্যাঙ্কার দখল করে নেয়, শত্রুদের বিপুল পরিমাণ আধুনিক অস্ত্র মুক্তিযােদ্ধাদের কবজায় আসে।
পাক সেনাদের পুনরায় লাতু (সাবাজপুর রেলওয়ে ষ্টেশনে অবস্থানের সংবাদ পেয়ে গত ১লা আগষ্ট তারিখে মুক্তিবাহিনী খান সেনাদের উপর প্রচণ্ড গুলিবর্ষণ করতে থাকে—গুলির আঘাতে সৈন্যদল ছিন্ন বিচ্ছিন্ন হইয়া যায়। বেলুচ সৈন্যরা মুক্তিযােদ্ধাদের উপর গুলি করতে বিরত হওয়ায় পাঞ্জাবী ও বেলুচ সৈন্যদের মধ্যে হাতাহাতি মারামারি শুরু হয়ে যায়। পাঞ্জাবী সেনা একজন বেলুচ হাবিলদারকে গুলি করে হত্যা করার সঙ্গে সঙ্গে লাতুতে (সাবাজপুর) অবস্থিত পাক-সৈন্য শিবিরের অবস্থা চরমে উঠে। বেলুচ সেনাবাহিনী পাঞ্জাবী সেনাদল হইতে বিচ্ছিন্ন হইয়া আলাদা শিবির স্থাপন করে এবং মুক্তিযােদ্ধাদের বিরুদ্ধে তারা আর হাতিয়ার প্রয়ােগ না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করিয়া বিদ্রোহ ঘােষণা করিয়াছে।
বিগত ২৯শে জুলাই শ্রীহট্ট জেলার জকিগঞ্জ থানার আটগ্রামে মুক্তিবাহিনী এক অভিযান চালিয়ে ২৩ জন পাক-সৈন্যকে হত্যা করে, শতাধিক হানাদার আহত হয়। অসীম সাহসী মুক্তিফৌজ ৩ জন পাক সৈন্যকে জীবন্ত বন্দী করে তাহাদের শিবিরে নিয়ে আসে, পাক-সেনাদের ব্যাঙ্কার ও বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্রও মুক্তিবাহিনী দখল করে নেয়।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ৪ আগস্ট ১৯৭১