শ্রীহট্ট রণাঙ্গনে পাকসেনাদের বিপর্যয়
বহু পাকসেনা হতাহত-৫টী হাতী সহ বহু অস্ত্রশস্ত্র মুক্তিফৌজের দখলে
সিলেটখণ্ডে মুক্তিসেনারা ইতঃস্তত আক্রমণ চালিয়ে গত সপ্তাহে বহু সংখ্যক পাকসেনাকে হতাহত করেছে বলে সীমান্তের ওপার থেকে সংবাদ পাওয়া যাচ্ছে। | মুক্তিফৌজের গেরিলা বাহিনী আক্রমণ চালিয়ে ‘শাহাবাজপুর রেল ষ্টেশনে অবস্থানরত ৯ জন পাকসেনাকে নিহত করেছে ষ্টেশনের গেট ঘরে প্রহরারত সেন্ট্রিও নিহত হয়েছে। অন্য একটি আক্রমণে ১৩ জন খানসেনা মৃত্যুবরণ করে। উল্লেখযােগ্য যে পূর্ব সপ্তাহে এই একই স্থানে ৭জন পাকসেনাকে নিহত করা হয়।
সুতারকান্দির সন্নিকটস্থ বড়গ্রাম বি, ও, পিতে আক্রমণ চালিয়ে মুক্তিসেনারা ৩ জন পাকসেনা ও ২জন দস্যুকে নিহত করে।
বিয়ানীবাজার থানা হেড কোয়ার্টারের দেড় মাইল উত্তরে সিলেট-বারৈগ্রাম সি, এ, বি, রাস্তার সড়ক ভাঙ্গনের পুলটী মুক্তিবাহিনী বিধ্বস্ত করে দেয়। ঐ পুলে প্রহরারত ৬ জন রাজাকারকেও হত্যা করে। তাদের ৬টী রাইফেল ও কিছু গােলা বারুদ মুক্তিফৌজ হস্তগত করেছে। একটী জীপে গ্রেনেড নিক্ষেপের ফলে বিয়ানীবাজারের কুখ্যাত মুসলীম লীগের দালাল কালামিয়া গুরুতরভাবে আহত হয়।
জকিগঞ্জ থানার অধীনস্থ রহিমপুর বাজার একটী পাকা পুল মুক্তিফৌজের গ্রেনেডের ঘায়ে উড়ে গেছে। প্রহরারত দু’জনের মৃত্যু হয়েছে এবং তাদের দুটা রাইফেলও মুক্তিফৌজের দখলে এসেছে।
জুরির নিকটবর্তী বিধ্বস্ত সেতু পুনঃনির্মাণের জন্য পাকবাহিনী ৫টী হাতী কাজে লাগায়। মুক্তিফৌজ সেতুর দুই জন পাহারাদারকে নিহত করে ও ৫টী হাতীকে ধরে নিয়ে আসে।
গেরিলা বাহিনী সিলেট শহরে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে সার্কিট হাউস ও ডেপুটী কমিশনারের বাংলােটী বিনষ্ট করে দিয়েছে বলে সংবাদ পাওয়া গেছে।
১১ জুলাই ভােরবেলা পাক হানাদার বাহিনীর একজন সুবেদার ও একজন জমাদার ড্রাইভার সহ শেওলা থেকে যাওয়ার পথে আটগ্রামের এক মাইল আগে মুক্তিবাহিনীর পােতা মাইনের বিস্ফোরণে মারা যায়। জীপটীও টুকরাে টুকরাে হয়ে রাস্তায় ছড়িয়ে পড়ে।
সূত্র: দৃষ্টিপাত, ২১ জুলাই ১৯৭১